গতকাল বুধবার বোধনের মধ্যদিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে গত মঙ্গলবার রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ নেতারা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নেতারা মতবিনিময়কালে বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও কক্সবাজারে তেমন একটি ঘটনাও ঘটেনি। তাদের মতে, কক্সবাজারই দেশের একমাত্র জেলা যেখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কখনোই বিনষ্ট হয় না। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর উদয় শংকর পাল মিঠু এমনটাই দাবি করেছেন। তিনি বলেন, কক্সবাজারকে দেখেই দেশের বাকি ৬৩ জেলা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শিক্ষা নেবে। এবার কক্সবাজার জেলায় ৩২১টি মণ্ডপে হবে দুর্গোৎসব। আগামি ১৩ অক্টোবর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিশাল প্রান্তরে বর্ণাঢ্য বিসর্জনের মধ্যদিয়ে এই উৎসব শেষ হবে। দুর্গোৎসবকে ঘিরে জেলা শহর ও জেলাজুড়ে নিরাপত্তাবলয় তৈরি করা হয়েছে। সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে হার্ডলাইনে থাকছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধান ও অভিযোগ গ্রহণ করার জন্য খোলা হয়েছে ১৪টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। এর মধ্যে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, কোস্ট গার্ড এবং ৯ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রধান করে কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
জেলা পুলিশের ৭৫০ জন সদস্য পূজায় আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জসিম উদ্দিন চৌধুরী। এরই মধ্যে সব স্তরের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে জেলা প্রশাসকের প্রস্তুতি সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, দুর্গাপূজায় প্রতিটি উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। মাঠে ৪ স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, সাদা পোশাকের পুলিশ তৎপর থাকবে। তিনি জানান, ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে বিসর্জনের দিন বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকেও আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, আমরা ৪ স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করেছি। ৭৫০ জন পুলিশ সদস্য সার্বক্ষণিক মাঠে-মণ্ডপে নিয়োজিত থাকবে। সাদা পোশাকের পুলিশ থাকবে মাঠে। এ ছাড়াও পুলিশ-র্যাব এরই মধ্যে বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উদয় শংকর পাল মিঠু বলেন, আমাদের শারদীয় উৎসব আনন্দঘন করতে প্রশাসন প্রস্তুতি শেষ করেছে। আমরা প্রশাসনের প্রস্তুতি নিয়ে খুশি এবং সন্তুষ্ট। তিনি জানান, জেলায় এবার ৩২১টি মণ্ডপে পূজা হবে। এর মধ্যে প্রতিমা পূজা ১৫১টি ও ঘট পূজা ১৭০টি।