ঢাকা ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বগুড়ায় গাভী পালনে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরা

বগুড়ায় গাভী পালনে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরা

বগুড়ার গ্রামীণ এলাকায় নারীরা গাভী পালন করে আর্থিকভাবে সাবলম্বী হওয়ার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। গরু পালন ও দুগ্ধ উৎপাদন কর্মকাণ্ড নারীদের ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এখানকার গ্রামের নারীরা নিজ উদ্যোগে গাভী পালন করে পারিবারিক অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে এবং সমাজে স্বাবলম্বী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করছে।

এ ক্ষেত্রে বগুড়া সদরের সাবগ্রাম এলাকার উম্মে হাবীবা রীমাও পিছিয়ে নেই। তিনি প্রায় ৩ বছর আগে ১ লাখ টাকায় গাভীর ২টি ছোট বকনা বাচ্চা ক্রয় করে খামার তৈরির স্বপ্ন দেখেন। তবে গাভী পালন করে খামার তৈরির স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ খুব একটা সহজ ছিল না তার। মনের ইচ্ছাশক্তি ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিন বছরের ব্যবধানে রীমা তার স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত করেছে।

সরকারি-বেসরকারি কোনো সহযোগিতা ছাড়াই নিজ বাড়িতেই তৈরি করেছে ক্ষুদে গাভীর খামার। খামারে বিদেশি প্রজাতির ৭টি গাভী রয়েছে। যার প্রতিটি গাভীর মূল্য ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। এলাকায় রীমাকে সবাই এখন একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে চেনে।

তাকে দেখে এলাকার অনেকেই গাভী পালনে আগ্রহ প্রকাশ করছে। নিজ উদ্যোগে গাভী পালন করে আজ তিনি স্বাবলম্বী। তার মধ্যে তিনটা গাভীর পেটে বাচ্চা। আর কয়েক মাস পার হলেই তার খামারে আরো তিনটা গাভী যোগ হবে। নতুন অতিথির আগমনে একটু খুশিই তিনি। গাভীর গোবর দিয়ে তৈরি হয় জ্বালানি। সে কারণে রান্নার জন্য বাড়তি কোনো টাকা খরচ হয় না বলেও তিনি জানান। রীমা বলেন, গাভীগুলোকে নিজের সন্তানের মতোই যত্ন করি।

সময়মতো গোসল করাই, খাওয়াই, সন্তানকে যেভাবে লালন-পালন করতে হয় গাভীগুলোকেও সেভাবেই লালন-পালন করে আসছি।’ তিনি বলেন, ২টি গাভী প্রতিদিন ১৫-২০ লিটার দুধ দেয়। আর সেই দুধ বিকালে স্থানীয় সাবগ্রাম বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করি যে টাকা পাই তা দিয়ে গাভীর খাবার কিনে আনি। গাভী বিক্রির ৪ লাখ টাকা দিয়ে ২০ শতক জমি নিয়ে সেখানে ঘাস আবাদ করছি। আমার স্বপ্ন একজন বড় খামারের মালিক হবো। তার ইচ্ছা, একদিন তার অনেক বড় খামার হবে। সেখানে কাজ করে অনেক বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।

বগুড়া সদরের সাবগ্রাম এলাকার রীমা জহির উদ্দিন প্রামাণিকের কন্যা। তার একমাত্র সন্তান রুমান আহমেদ সাদিক ওরফে বিশাল বগুড়া ওয়াইএমসিএ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।

স্বামী পরিত্যাক্তা রীমা সন্তানের ভবিষ্যত জীবন উজ্জল করার জন্য নিজেকে খামারী ও সফল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত