দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ১৩ হাজার ৭৬০হেক্টর জমিতে চলতি মৌসুমে আমন ধান আবাদ শুরু হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বেশিরভাগ আমন খেতে মাজরা পোকার ব্যাপক আক্রমণ শুরু হয়েছে। একাধিকবার কীটনাশক ছিটিয়েও পোকা দমন না হওয়ায় দারুণ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা।
এতে ফলন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে আবার কয়েক দফা বালাইনাশক স্প্রে করার ফলে কৃষকদের গুনতে হসছে বাড়তি পয়সা। এরফলে ধানের উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। কৃষকরা বলছেন এ মৌসুমে অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে জমিতে কীটনাশকের কার্যকারিতা হারাচ্ছে। উপজেলার অলোকঝারি, ধর্মপুর, উত্তর বালাপাড়া, খামার বিষ্ণুপুর, ভেরভেরি, টোঙ্গুয়া, আঙ্গারপাড়া, ছাতিয়াঙ্গর, খামারপাড়া, কায়েমপুর, রামনগড়, গোয়ালদিহি, দুবলিয়া, নলবাড়ি এবং কাচিনিয়ার আমন খেতে ধানের গাছে থোর এসেছে। কিছু কিছু আগাম জাতের গাছে ধান থেকে শিষ বের হইছে। কেউ কেউ জমিতে কীটনাশক আবার কেউ কেউ সার ছিটাচ্ছেন। অনেকে আগাছা পরিষ্কারে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
নলবাড়ির কৃষক শাহজাহান আলী বলেন, এখনো ধানের গাছে থোর পর্যায়ে এসেছে। প্রতিবছর তিনবার বালাইনাশক ছিটালে আর দরকার হয় না। এবার এখনো ধানের শিষ বের না হলেও আর এর মধ্যেই তিনবার কীটনাশক স্প্রে করতে হয়েছে। আরো অন্তত তিনবার স্প্রে না করলে এবার ঘরে ফসল তুলতে পারবো না। কায়েমপুর গ্রামের কৃষক মোল্লাত আলী বলেন আমনখেতে মাজরা পোকার আক্রমনের পাশাপাশি গোড়ায় পঁচা রোগ দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন আমি কীটনাশক প্রয়োগ করেছি। তবে আমন খেতে পুরোপুরি পোকামুক্ত হয়নি। গোড়া রোগের পঁচা বিনাশে কীটনাশকের কার্যকারিতা খুবই কম।
হোসেনপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, আবাদের শেষ সময়ে হঠাৎ ধানের শিষ কেটে দিসছে পোকা। এতে শিষ সাদা হয়ে বের হচ্ছে, ৬বিঘা জমিতে ৯হাজার টাকা খরচ করে ৪বার স্প্রে করার কথা জানান তিনি। এতেও পোকা দমন হয়নি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়েসমিন আক্তার জানান, খানসামা উপজেলায় এবার ১৩ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৬৭ হাজার টন। সময়মতো কৃষকদের সরকারি প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। প্রতিবছরই মাজরা পোকার আক্রমণ হয়। তবে কৃষকেরা সঠিকভাবে সঠিক সময়ে কীটনাশক ব্যবহার করলে পোকা দমন ও গোড়া পচন রোধ করা সম্ভব বলে তিনি জোর দিয়ে জানান। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা (ব্লক সুপার ভাইজার) কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছেন বলে তিনি জানান।