চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর মধ্যে অন্যতম পাওয়ার হাউজ মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস মোড় পর্যন্ত সড়কটি। যার আনুমানিক দৈর্ঘ ৩৩০ মিটার। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে হাজার হাজার মানুষ। তিন উপজেলার প্রবেশদ্বার জনবহুল এই সড়কটি বছরের পর বছর মেরামত না হওয়ায় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কটিতে পানি জমতে শুরু করে। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। জানা যায়, প্রায় ১২ বছর আগে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়েছিল। এরপরে থেকেই রাস্তা সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ফলে সময়ের সাথে সাথে রাস্তাটির অবস্থা এখন চরম বেহালদশায় পরিণত হয়েছে। সড়কটির একপ্রান্তে রয়েছে জেলা পরিষদ কার্যালয় ও নেসকোর বিতরণ বিভাগ-১ ও ২ কার্যালয়। অন্যপ্রান্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জেলা কার্যালয়, ফায়ার সার্ভিস উপ-সহকারী পরিচালকের কার্যালয়সহ ৫৩ বিজিবি ব্যটালিয়নের সদর দপ্তর। এ ছাড়া সড়টিতে মার্কেট, কাঁচা বাজার, মুদি দোকান, ফার্মেসিসহ আছে বিভিন্ন প্রকারের প্রায় দু’শতাধিক দোকান। জেলার গোমস্তাপুর, নাচোল, ভোলাহাটসহ সদরের আমনুরা এলাকার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এই সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করেন। সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটিতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের যাতায়াত বেশি। বাস-ট্রাকের যাতায়াত কিছুটা কম। রাস্তাটিতে যাতায়াতের সময় অটোরিকশার যাত্রীরা দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়েই যাতায়াত করেন। মুদি দোকানি গোলাম মোস্তফা জানান, দোকান দেয়ার পরে থেকে এ সড়কের সংস্কার করতে দেখতে পাইনি। রাস্তার বেহাল দশার কারণে মালামাল বিক্রি করতে ভোগান্তি পহাতে হয়। ধুলা পড়ে খোলা অবস্থায় নিত্যপণ্য রাখা যায় না, রাখলে পরে আর বিক্রি করার উপযোগী থাকে না। আর ধুলার কারণে দোকানে আসা ক্রেতারা বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। এতে ব্যবসায় মন্দা দেখা দেয় অনেক সময়। রাশিদুল ইসলাম নামে এক পিকআপচালক বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের মধ্যে ঢোকার জন্য এই রাস্তাটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অথচ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় বেহালে পরিণত হয়েছে। রাস্তাটিতে যাতায়াতে অনেক সময় গাড়ির নাটবল্টু খুলে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা মিনহাজুল ইসলাম বলেন, শহরমুখী মানুষের খুবই ব্যস্ততম সড়কগুলোর একটি এটি। অথচ বছরের বছর ধরে রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। এতে দুর্ভোগ পহাতে হয় পথচারীরেদর। অনেক সময় অটোরিকশাচালক এদিকে আসতে চান না। ফলে যাতায়াত নিয়েও সমস্যা দেখা দেয়। বিভিন্ন সময় সড়কটিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার পক্ষ থেকে ভরাট ফেলা হয়েছিল। যেন এখানেই তাদের দায়িত্ব শেষ। যদিও গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি জেলা পরিষদের। জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী মো. সুজাউল ইসলাম বলেন, রাস্তাটির মালিকানা জেলা পরিষদের হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা সংস্কার করতে চেয়েছে। এর জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে জেলা পরিষদের কাছে অনাপত্তিপত্র চাওয়া হয়েছে। আশা করা যায় খুব শিগগিরই এ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী তৌফিকুল ইসলাম বলনে, রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে থাকায় পথচারীদের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তার জায়গাটি পৌরসভার মধ্যে পড়ে, যার কারণে আমরা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। সে জন্য জেলা পরিষদের কাছে অনাপত্তিপত্র চাওয়া হয়েছে। আশা করছি তারা পত্রটি হস্তান্তর করবে। তিনি আরো বলেন, রাস্তাটি সংস্কারের জন্য এরই মধ্যে পৌরসভার পক্ষ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে দরপত্র প্রক্রিয়ার সব কাজ সম্পন্ন হবে।