দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব

ঠাকুরগাঁওয়ে মন্দিরে ১১ বার ১৪৪ ধারা জারি

প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ গ্রামে শ্রী শ্রী রশিক রায় জিউ মন্দির এলাকায় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুটি গ্রুপ সনাতন এবং ইস্কন মতাদর্শ লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে একই স্থানে এ নিয়ে ১১ বার জারি করা হলো ১৪৪ ধারা।

আজ রোববার বেলা ১২টায় এ জারির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেলায়েত হোসেন এ আদেশ জারি করেন। আদেশে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সৃদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ গ্রামে শ্রী শ্রী রশিক রায় জিউ মন্দিরে দুর্গা পূজা উদযাপনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এবং মন্দিরের নামে থাকা অধিক পরিমান জমি-জমা ভোগদখলকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুটি গ্রুপ সনতন ধর্মালম্বী এবং ইস্কন মতাদর্শ লোকজনের মধ্যে দীর্ঘ ১৪-১৫ বছর ধরে বিরোধ চলে আসছিল।

আদেশে আরো জানা যায়, মন্দিরের সম্পত্তি নিয়ে পক্ষদ্বয়ের মধ্যে মারামারিসহ খুনের ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের বেশ কয়েকটি মামলাও চলমান রয়েছে। উভয় পক্ষের মধ্যে সাংঘর্ষিক সম্পর্ক বিরাজ করার কারণে ৭ অক্টোবর ভোর ৬টা হতে ১৩ অক্টোবর দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারির আদেশ প্রদান করা হয়।

এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিনের পুরাতন শ্রী শ্রী রসিক রায় জিউ মন্দিরের নামে ২টি মৌজায় মোট ৫২ একর দেবত্তোর জমি রয়েছে। এই জমির মালিকানা নিয়ে মন্দিরের সেবাইত ফুলেন চন্দ্র সরকারের সাথে এলাকার কিছু লোকজনের বিরোধ চলছিল।

১৯৯৩ সালে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে সেই বিরোধের নিস্পত্তি হয়। কিন্তু ২০০৯ সালে ইস্কনের লোকজন ওই জমির মালিকানা দাবি করে আকস্মিক ভাবে মন্দিরে অবস্থান নেয়। এই নিয়ে ২০০৯ সালে সেখানে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সাথে ও ইস্কনের লোকজনের সংষর্ষ হয়। এতে ফুলবাবু নামে একব্যক্তি মারা যায়। এ ঘটনায় ইস্কনের লোকজনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এই নিয়ে সেখানে দুই পক্ষের বিরোধ চলতে থাকে এবং প্রতি বছর দুর্গা পূজার সময় উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এ বিরোধ নিরসনে আপোষ মিমাংশার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় প্রশাসন।

পরবর্তীতে ২০১৪ সালে ওই মন্দিরে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ দুর্গা পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি নিলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এই উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি সাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।

এবারো সেই ধারা অব্যাহত আছে। এ নিয়ে ১১ বার ১৪৪ ধারা জারি হলো। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই মন্দিরের সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ আছে। এবার এই পূজা শেষে আমরা তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি দুই পক্ষের রেকর্ডপত্র ও অন্যান্য বিষয়াদি যাচাই করে এই সমস্যাটির কি পার্মানেন্ট সলিশন হতে পারে সে বিষয়ে উদ্যোগ নেবো।