খেজুর গাছের রস সংগ্রহে গাছিদের আগাম প্রস্তুতি
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
উত্তর জনপদের জেলা নওগাঁর রাণীনগরে আগাম শীতের আমেজ দেখা দিয়েছে। রাস্তার সরকের ধ্যারে পুকুর পাড়ে গাছের ডালে ও ফসলের জমিতে ধানের পাতায় ঘাসের ডগায় বিন্দু বিন্দু শিশির জমে থাকায় জানান দেয় শীতের আগাম বার্তা। ছয় ঋতুর সুজলা সুফলা সবুজে ঘেরা এই বাংলাদেশে ভোরের আকাশে সূর্য়ের উষ্ণ তাপে সন্ধ্যা নামলেই হিমেল হাওয়ায় সকালের কুয়াশায় জানান দিচ্ছে শীতের উপস্থিতি। আশ্বিনের শেষে রাণীনগরে গ্রামীণ জনপদে খেজুর গাছে গাছে গাছিরা রস সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছে গাছিরা। ১ সপ্তাহের মধ্যেই গাছ থেকে রস সংগ্রহে শুরু করবেন এমনটাই বলছেন গাছিরা। গ্রাম বাংলার খেজুর গাছ থেকে আর মাত্র সপ্তাহ খনেক পর রস সংগ্রহ শুরু হলে কার্তীক মাস থেকে এই খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে লালি ও গুড় তৈরির কার্যক্রম চলবে প্রায় মাঘের শেষ পর্যন্ত। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে এ দৃশ্য চোখে পড়তে শুরু করেছে। খেজুর গাছের রস ও গুড়ের জন্য রাণীনগর উপজেলায় একসময় খ্যাতি থাকলেও সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে খেজুরের রসের লালি ও গুড়। এক সময় অধিকাংশ বাড়িতে, ক্ষেতের আইলে, ঝোপঝাড় পুকুর পাড়ে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ। কোনো পরিচর্চা ছাড়াই অনেকটা প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠতো এই সব খেজুর গাছ। পরিবারের চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত রস দিয়ে তৈরি করা হতো সুস্বাদু খেজুরের গুড়। ইট ভাটার রাহুগ্রাসে ও অন্যান্য জ্বালানি হিসেবে খেজুর গাছের ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণে যে পরিমাণ গাছ চোখে পড়ে তা নির্বিচারে নিধন করায় দিন দিন খেজুর গাছ কমে যাচ্ছে। উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের কুজাইল গ্রামের বাবু প্রামাণিক জানান, আমার ৫টি খেজুর গাছ আছে গত বছরের মতো এবারও গাছিদেরকে প্রতিটি গাছ ৩ কেজি গুড় দিবে বলে বর্গা দিয়েছি। রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলা থেকে আসা গাছিয়া মামুন প্রামানিক জানান, আমরা প্রতি বছর এই এলাকায় আসি। এ বছর গোনা ইউনিয়নের ভবাণীপুর শেকপাড়া গ্রামের মুনছুরের বাড়ি ভাড়া নিয়ে আমরা আছি। শীত মৌসুমে খেজুর গাছ মালিকদের কাছ থেকে প্রায় ৪ মাসের জন্য গাছ ভেদে ২ থেকে ৩ কেজি করে খেজুরের গুড় দিয়ে গাছ গুলো আমরা বর্গা নিয়ে থাকি। চাহিদা মত খেজুর গাছ না পাওয়ার কারণে রস কম হওয়ায় আশানুরুপ গুড় তৈরি করতে পাড়ি না। তারপরও এবছর প্রায় শতাধিক খেজুর গাছের মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করেছি। দাম বেশি হলে এবছর লাভ ভালো হবে এমনটাই আশা করছি।