প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শিবালয় উপজেলার মহাদেবপুর-ঝিটকা সড়কে নির্মিত ব্রিজের দুই পাশের অ্যাপ্রোচ বছর পার হওয়ার আগেই ধসে যাচ্ছে। এরইমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ব্রিজটি। এ নিয়ে এলাকাবাসী চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর মানিকগঞ্জের তত্ত্বাবধানে নির্মিত ব্রিজটির নির্মাণকাজের দায়িত্ব দেয়া হয় ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার আতিয়ার রহমানের মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। এলজিইডি সূত্র জানায়, ২১-২২ অর্থবছরে ৩ কোটি ৬২ লাখ ৭০,৭৮২ হাজার টাকার নির্মাণ কাজটি দেয়া হয় মোহাম্মদপুর এলাকার ঠিকাদার আতিউর রহমানকে। ২০২২ সালের ২ মে কাজ শুরু করে ২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর কাজটি শেষ করা হয়। এরইমধ্যে চূড়ান্ত বিল উত্তোলন করা হয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়- ২০ মিটার দীর্ঘ ব্রিজের দুপাশের অ্যাপ্রচ ধসে গেছে। নামমাত্র সিমেন্ট ও অপর্যাপ্ত রড ব্যবহার করায় অ্যাপ্রোচের ব্লক গুলো আগলা হয়ে পড়েছে। যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় স্লপিং করা হয়নি। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহনগুলো ব্রিজে ওঠানামা করছে। শিমুলিয়া এলাকার আব্বাস আলী বলেন, এ ব্রিজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এজন্যই এত তাড়াতাড়ি এপ্রোচ ও রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। এতে করে যে কোনো সময় ব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। বিগত সরকার উন্নয়ন কাজের নামে শুধু অর্থ লোপাট করেছে। একই এলাকার জহুরা বেগম বলেন, অনেকদিন ভোগান্তির পর এ ব্রিজটা বানানো হয়েছিল। এত তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে গেল। এখনো এক বছরই হয়নি। অটোরিকশা চালক রহিম মিয়া বলেন, কয়েকমাস আগে নতুন করে বানানো এ ব্রিজ এখন ঝুকিপূর্ণ হয়ে গেছে। রাস্তার দুইপাশেই ভেঙে গেছে।
ঢাল (স্লোপিং) ঠিকমতো না হওয়ায় কোনোমতে আমাদের অটোরিকশা চলাচল করতে পারলেও বড়গাড়ি চলাচলে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এ বিষয়ে ঠিকাদার আতিয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার ম্যানেজার মো. জাহিদ হোসেন জানান, কাজটি আমাদের ফার্মের হলেও বাস্তবায়ন করেছে সাবেক এমপি এসএম জাহিদের ফুফাতো ভাই কাজী মাকসুদুল ইসলাম। মাকসুদুল আত্মগোপনে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এলজিইডি মানিকগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এবিএম খোরশেদ আলম বলেন, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিষয়টির সঠিক কারণ উদ্ঘাটনে জেলা থেকে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। তারা সরেজমিন পরিদর্শন করে রিপোর্ট প্রদান করবে।