ঢাকা ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

এক পায়ে লিখে আলিম পাস করেছেন রাসেল

এক পায়ে লিখে আলিম পাস করেছেন রাসেল

জন্ম থেকেই দুই হাত নেই, ডান পাও নেই। বাঁ পা থাকলেও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা খাটো। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখেন পড়াশোনা করে সরকারি চাকরি করবে। তাই কোনো বাধাই তাকে পিছু ফেলতে পারেনি। পায়ের আঙুলের ফাঁকে কলম রেখে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অদম্য প্রতিবন্ধী রাসেল মৃধা পাস করেছে। সিংড়া শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৩.২৯ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। এর আগে নাটোর জেলা সিংড়া আল মাদরাসাতুল জামহুরিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। রাসেল মৃধা নাটোরের সিংড়া উপজেলার শোলাকুড়া এলাকার দিনমজুর আব্দুর রহিম মৃধার ছেলে। ছেলের পাস করার খবর পেয়ে বাবা-মা, ভাইসহ পরিবারের সবাই আনন্দিত। রাসেল মৃধার বাবা আব্দুর রহিম মৃধা বলেন, আমার ছেলে প্রতিবন্ধী হয়েও দুই পরীক্ষায় পাস করেছে। সেজন্য আমিসহ আমার পরিবার অনেক আনন্দিত। অভাব-অনটনের মধ্যেও আমার ছেলের পড়াশোনা বন্ধ করেনি।

আমার প্রতিবন্ধী ছেলে তার মনোবল ও ইচ্ছা শক্তিতে আজ সে আলিম পাস করেছে। সেজন্য আমরা সবাই অনেক খুশি। আমার ছেলের এ সফলতার পেছনে শিক্ষকদের অনেক শ্রম রয়েছে। শিক্ষকদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ। আমার ইচ্ছা সে এভাবে এমএ পাস করে উচ্চশিক্ষা শেষে তার যোগ্যতায় সে চাকরি করবে। সেজন্য আমার যত কষ্টই হোক আমি ছেলের জন্য তা করবো। শিক্ষার্থী রাসেল মৃধা বলেন, অনেক ভালো লাগছে আমি আলিম পরীক্ষায় পাস করেছি। আমার বাবা দিনমজুরের কাজ করে আমার মতো একজন প্রতিবন্ধী ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছেন। আমি আমার বাবা-মার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। সরকারের কাছে অনুরোধ, আমার মতো একজন প্রতিবন্ধী মানুষকে একটা সরকারি চাকরি যেন দেন। আমি চাকরির পাশাপাশি পড়াশোনা করতে চাই।

আমার পরিবারের দায়িত্ব নিতে চাই। শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোতাররফ হোসেন বলেন, রাসেল মৃধার দুই হাত নেই, একটি পা আছে সেটাও স্বভাবিক নয়। আঙুল দিয়ে লিখে পরীক্ষা দেয়। রাসেল নানা প্রতিকুলতার মাঝেও সে পড়াশোনা করে যাচ্ছে। সে দরিদ্র পরিবারের সন্তান। আমরা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সব সময় সহযোগিতা করে আসছি। আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৩.২৯ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। সে ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে। তার ইচ্ছা শক্তির কারণে আজ সে এত দূর পৌঁছাতে পেরেছেন। তার জন্য দোয়া করি, সে পড়াশোনা শেষে বা-মার স্বপ্ন পূরণ করুক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত