সুন্দরবনে হরিণ নিধন ও বিষপ্রয়োগে মাছ শিকার

প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি

কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না সুন্দরবনে হরিণ নিধন ও বিষ দিয়ে মাছ শিকার করা। বনাঞ্চল সংলগ্ন অনেকগুলো চোরা শিকারি চক্র প্রতিনিয়ত ফাঁদ পেতে নির্বিচানে হরিণ শিকার করে মাংস বিক্রি করে ফায়দা লুটে নিচ্ছে। আর শত শত অসাধু জেলে নিষিদ্ধ ঘন ফাঁসের ভেষালি, চরপাতা, খালপাটা জালে দেদারসে মাছ শিকার করছে। এসব জেলেরা সুন্দরবনের বিভিন্ন খাল ও ভারানিতে রিপকর্ড বিষ প্রয়োগ করে চিংড়িসহ বিপুল পরিমাণ ছোট প্রজাতির মাছ শিকার করে আর্থিক ফায়দা হাসিল করছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম সুন্দরবনের কয়রা, শ্যমনগর ও দাকোপের বনাঞ্চল সংলগ্ন জোড়শিং, পাতাখালি, আংটিহারা, গোলখালি, খাসিটানা, গাতিরঘেরি, পাথরখালি, ৫নং কয়রা, ৪নং কয়রা, ৬নং কয়রা, মঠবাড়ি, তেতুলতলা, শেখেরকোনা, হড্ডা, গড়ুইখালি, কালাবগি, বানিশান্তা, গাবুরা, মুন্সীগঞ্জ, হরিনগরসহ অন্যান্য রুট দিয়ে প্রায় সময় সচরাচর শত শত কেজি হরিণের মাংস পাচার হচ্ছে। গত শনিবার রাতে ৪নং কয়রা এলাকায় কোস্টগার্ড অভিযান চালিয়ে ১০০ কেজি হরিণের মাংসসহ দুইজনকে আটক করে। ২ অক্টোবর রাতে গোলখালি সরকারি পুকুর পাড় এলাকায় বন বিভান ও কোস্টগার্ডের যৌথ অভিযানে হরিণের মাংস সহ এক জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সম্প্রতি মহেশ্বরীপুর, জোড়শিং, পাতাখালি গ্রামে পৃথক অভিযানে ৩৮ কেজি হরিণের মাংস সহ আরো দুই চোরাকারবারীকে আটক করে পুলিশ। ৪নং ও ৫নং কয়রার ১৫/২০ জনের সংঘবন্ধ চোরা শিকারীচক্র প্রতিনিয়ত সুন্দরবনে ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করে ৫০০ টাকা কেজি দরে লোকালয়ে বিক্রি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এদের বিরুদ্ধে বন বিভাগ আদালতে কয়েকটি মামলা করলেও রোধ হচ্ছে না এ সকল চোরা শিকারিচক্রের বেপরোয়া কর্মকাণ্ড। এদিকে, সুন্দরবনের অভয়ারণ্যসহ বনের অন্যত্র অসাধু জেলেরা সারা বছর বিষ দিয়ে মাছ শিকার করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি অভয়ারণ্যের ভোমরখালি টহল ফাঁড়ি এলাকার খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার করার সময় জাল ও নৌকাসহ বনরক্ষীরা হাতেনাতে দুই জেলেকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। গেড়া চালকি, মার্কি, দুধমুখ, মোরগখালি, চেরাগখালি, পুস্পকাটি, মান্দারবাড়ি, পাথকষ্টা, কালিরচর, নিলকমলের চিছখালি, কেওড়াসুতি, বুন্দ সহ অভয়াণ্যের অন্যান্য নদীখালে বনরক্ষীদের সাথে আর্থিক চুক্তিতে শত শত জেলে সারাবছর মাছ শিকার চালিয়ে যাচ্ছে।