মুন্সীগঞ্জে গ্যাসের তীব্র সংকট

প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

মুন্সীগঞ্জে তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। গ্যাসের চাপ না থাকার ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গৃহিনীদের। টিমণ্ডটিম করে গ্যাসের চুলায় আগুন জ্বলায় ভাত-তরকারি রান্না করা তো দূরের কথা সামান্য পানি গরম করতেই পেরিয়ে যাচ্ছে ঘণ্টা পর ঘণ্টা। এ অবস্থায় অনেকে আবার মাটির চুলোয় লাড়কির জ্বালানিতে সারছেন রান্না-বান্না। কারো কারো ঘরে তিতাস গ্যাসের অভাব পূরণ হচ্ছে এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডারে। রাজধানীর কাছের মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় দিনের পর দিন গ্যাস সংকটের কারণে ঘরে ঘরে এমন ভয়াবহ চিত্র দেখা মিলেছে। সদর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা ও মিরকাদিম পৌরসভা জুড়ে গ্যাস সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। চাহিদার তুলনায় অর্ধেক সরবরাহের কারণে এ সংকট দেখা দিয়েছে। এতে গ্যাসের অভাবে আছে এখানকার প্রায় ১৪ হাজার পরিবার। সরেজমিনে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মালপাড়া, মানিকপুর, হাটলক্ষীগঞ্জ, দেওভোগ, খালইষ্ট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে অনেকের ঘরেই গ্যাস নেই। হাতে গোনা পরিবার গ্যাসের চুলোয় টিম টিম আগুনে রান্না সারছেন। অনেক পরিবার মাটির চুলোতে লাড়কির জ্বালানিতে আবার কেউ কেউ এলপিজির সিলিন্ডারে রান্না করছেন। এসব পরিবারের অনেকেই সকালের খাবার খেয়েছেন হোটেল থেকে এনে। এদিকে, বাড়িতে তিতাস গ্যাসের সংযোগ থাকা সত্বেও শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকার গৃহিনী নাসিমা বেগমকে (৩৫) দেখা গেছে রান্না ঘরের বাইরে মাটির চুলায় রান্না করতে।

তিনি জানান, সকাল দুপুর কিংবা রাত কোনো বেলাতেই গ্যাস মিলছে না। মাঝে মধ্যে গ্যাস এলেও তাতে চুলোতে টিমটিম করে জ্বলে আলো। এতে করে রান্না করা যায় না। খাবার রান্না করা এখন তাদের কাছে দুস্কর হয়ে উঠেছে। শহরেরদেওভোগ এলাকার গৃহবধূ লিপি বেগম বলেন, ফজরের সময় উঠে গ্যাসের চুলোয় গরম পানি বসিয়ে নামাজে যাই। এতে দেখি পানি ঠিকমত গরম হয়নি। পরিবারে তিন ছেলে মেয়ে লেখাপড়া করে। ওদের ঠিকমত নাস্তা বানিয়ে দিতে পারি না। আর বিকালেও ঠিকমতো গ্যাস থাকে না। রাতে বাচ্চাদের খাওয়াতে খাওয়াতে ১২টা বেজে যায়। শহরের মালপাড়া এলাকার গৃহবধূ বেলী (৪৬) বলেন, দিনরাত মিলে ২৪ ঘণ্টাই গ্যাস সংকটে ভুগছি। গ্যাসের চাপ এতোটাই কম, চুলোতে টিমটিম করে আলো জ্বলে। তাতে রান্না-বান্না করা বেশ সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুন্সীগঞ্জ নাগরিক সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাড. সুজন হায়দার জনি বলেন, মুন্সীগঞ্জে গ্যাসের সরবরাহ দিনদিন কমছে। গ্যাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গ্রাহকরা। গ্যাস সংকট সমাধানে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া দরকার। মুন্সীগঞ্জ তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপক শাহ্ এমদাদ হোসেন জানান, মুন্সীগঞ্জ সদরে আবাসিক গ্যাস গ্রাহক রয়েছেন ২৩ হাজার ৯৫৭ জন। এখানে ৭১ লাখ ঘন মিটার গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। অথচ সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ৩৪ লাখ ঘন মিটার গ্যাস। তিনি বলেন, আমাদের চাহিদার অনুযায়ী অর্ধেকেরও কম পরিমাণ সরবরাহ পাই।