কিশোরগঞ্জে কুলিয়ারচরে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে এইচএসসি পাস করেছেন। ৪৩ বছর বয়সী মো. বদিউল আলম (নাঈম) পেয়েছেন জিপিএ ৪ দশমিক ২৯ এবং স্ত্রী ৩৩ বছর বয়সী শারমীন আক্তার পেয়েছেন জিপিএ ৪ দশমিক ৫। বিষয়টি এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তারা দুইজনেই এবার কুলিয়ারচর উপজেলার লক্ষ্মীপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ থেকে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ঢাকার অধীনে পরীক্ষা দিয়েছিলেন।
জানা গেছে, পেশায় ঠিকাদার নাঈম জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের দ্বাড়িয়াকান্দি গ্রামের মো. কনু মিয়া ও মোছাম্মাৎ সাজেদা দম্পতির ছেলে। ১৯৯৭ সালে তার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও আর পরীক্ষা দেয়া হয়নি তখন। ২০০৮ সালে বিয়ে করেন কুমিল্লা জেলার হোমনা থানার মঙ্গলকান্দি গ্রামের মো. ইসমাইল হোসেন ও মায়া বেগম দম্পতির মেয়ে শারমীন আক্তারকে। নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় বিয়ে হয় শারমীনের। ২০১০ সালে তার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও সন্তান গর্ভে আসায় আর পরীক্ষা দেয়া হয়নি। বর্তমানে নাঈমণ্ডশারমীন দম্পতির দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। তাদের বড় মেয়ে বুশরা আক্তার বীথি স্থানীয় ছয়সূতী ইউনিয়ন হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী ও মেজো ছেলে রেদোয়ান আলম সিয়াম একই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। সবার ছোট মেয়ে তাসনীম (৫) কে এখনো স্কুলে ভর্তি করায়নি। তারা দুইজনই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিন্নাবাইদ দারুল উলুম দাখিল মাদরাসায় ভর্তি হন। পরে, ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় নাঈম জিপিএ ৪ দশমিক ৯৫ এবং স্ত্রী শারমীন জিপিএ ৫ পেয়েছিলেন। শারমীন আক্তার বলেন, ২০২০ সালে বড় মেয়ে বীথি ও তৎকালীন কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম লুনার উৎসাহে নতুন করে পড়াশোনা করার আগ্রহ জাগে। সেই থেকে মনের জোর এবং স্বজনদের উৎসাহে আবার পড়াশোনা শুরু করে দুজনেই এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেছি। বদিউল আলম (নাঈম) বলেন, বিয়ের আগে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দিতে না পারলেও কয়েকবার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ব্যবসা ও সাংসারিক চাপে শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। আমাদের এই সাফল্যে আমাদের পরিবারসহ সবাই আনন্দিত হয়েছে। অদম্য ইচ্ছা থেকে হাল ননা ছাড়া নাঈমণ্ডশারমীন দম্পতির আলোচনা এখন জেলাবাসীর মুখে মুখে।