মিরসরাইয়ে একটি বাড়ির আঙিনা থেকে জালি তারের সাথে জড়ানো অবস্থায় ১২ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি অজগর সাপ উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ মহামায়া এলাকায় বনে অজগর সাপটি অবমুক্ত করা হয়। গত বুধবার উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠাকুরদিঘী এলাকা থেকে অক্ষত অবস্থায় ওয়াইল্ড অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের সদস্যদের সহযোগিতায় আজগর সাপটি উদ্ধার করেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বুধবার দুপুরে উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠাকুরদীঘি এলাকায় একটি বাড়ির পুকুরে জালি তারের সঙ্গে একটি অজগর দেখে স্থানীয়রা মিরসরাই রেঞ্জ কর্মকর্তাদের খবর দেন। খবর পেয়ে মিরসরাই রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহানশাহ নওশাদের নেতৃত্বে ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিমের সদস্য নাইমুল ইসলাম নিলয় অক্ষত অবস্থায় অজগরটি উদ্ধার করে। পরের দিন অজগরটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ মহামায়া এলাকার বনে অবমুক্ত করা হয়।
ওয়াইল্ড অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের সদস্য নাইমুল ইসলাম নিলয় বলেন, খবর পেয়ে অজগরটি অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মিরসরাই উপজেলা বন-বিভাগের উপস্থিতিতে বনে অবমুক্ত করা হয় সাপটি। মিরসরাই রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহানশাহ নওশাদ বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে লোকালয় থেকে অজগরটি উদ্ধার করে মহামায়া ইকোপার্কের বনে অবমুক্তকরি। উদ্ধার অজগরটির ওজন প্রায় ১২ কেজি। বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী অধিদপ্তর ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, অজগর নির্বিষ সাপ। এটি নিশাচর ও খুবই অলস প্রকৃতির, প্রয়োজন ছাড়া নড়াচড়াও করে না। এই প্রজাতিটি গাছে একাকী বাস করলেও শুধু প্রজননকালে জোড়া বাঁধে। সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে এদের প্রজননকাল। দেশের ম্যানগ্রোভ বন, ঘাসযক্ত জমি, চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ পাহাড়ি বনে এদের দেখা পাওয়া যায়। সাপটি সাধারণত মানুষের ক্ষতি করে না। খাদ্য হিসেবে এরা ইঁদুর, কচ্ছপের ডিম, সাপ, বন মুরগি, পাখি, ছোট বন্যপ্রাণী ইত্যাদি খায়। সাপটি নিজের আকারের চেয়েও অনেক বড় প্রাণী খুব সহজেই গিলে খেতে পারে।