সবুজ মাল্টায় তৃপ্তির ঝিলিক
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
জুড়ী (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
শখের বশে পুকুরপাড়ে ছোট্ট মাল্টা বাগান করে বাম্পার ফলন পেয়ে তুমুল সারা ফেলেছেন মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার তরুণ উদ্যোক্তা খোর্শেদ আলম। ১০ শতাংশ যায়গায় ৩০টি গাছের একটি প্রদর্শনী থেকে ভালো ফলন পেয়েছেন তিনি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ পাতার গাছে গাছে ঝুলছে বারি-১ জাতের সবুজ মাল্টা। পুকুর পারে সারি সারি মাল্টা গাছের ফলগুলো দেখতে কাচা মনে হলেও খেতে খুবই রসালো এবং মিষ্টি।
কৃষি বিভাগ জানায়, মাল্টা দেখতে সবুজ হলেও খেতে অত্যন্ত সু-স্বাদু ও মিষ্টি। বারি-১ জাতের এই মাল্টার উৎপাদন বাড়ছে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে। এ বছর জুড়ীতে মাল্টা উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৭৭ টন। সম্ভাবনাময় এই ফসল চাষাবাদে তুলনামূলক খরচ কম থাকায় সহজে ফলন হয়। সে জন্য কৃষকরা ঝুঁকছেন এখন মাল্টা চাষে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জুড়ী উপজেলায় ২৪ হেক্টর জমিতে মাল্টা বাগান গড়ে উঠেছে। গত বছর যা ছিল ২১ হেক্টর। উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে কম বেশি হচ্ছে মাল্টার আবাদ। রয়েছে ছোট বড় শতাধিক বাগান। জুড়ী উপজেলার পূর্বজুড়ী, ফুলতলা, সাগরনাল ও গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নে এর ফলন হচ্ছে বেশি। কেউ করেছেন সখের বসে চাষাবাদ আবার কেউ কেউ বাণিজ্যিক চিন্তাধারা নিয়ে। উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের লাঠিটিলার ডোমাবাড়ি গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা খোর্শেদ আলম ৩ বছর আগে ১০ শতক জায়গার উপর গড়ে তুলেন মাল্টা বাগান। গত বছর ফল আসলেও তেমন ভালো হয়নি। বিগত বছরের তুলনায় এবছর প্রত্যেক গাছে বারি-১ জাতের মাল্টায় ভরপুর। ফলন ভালো হওয়ায় নিজের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করছেন এসব মাল্টা। সুস্বাদু এই মাল্টার প্রতি আগ্রহ মানুষের। যার জন্য বিক্রি হয়ে যাচ্ছে খুব সহজেই। খোর্শেদ আলম জানান, সরকারিভাবে জুড়ী উপজেলা থেকে ১০ শতাংশ যায়গায় ৩০টি গাছের একটি প্রদর্শনী পান তিনি। গাছের বয়স এখন চার বছর হয়েছে। এই বছর প্রতিটি গাছে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০টি করে ফল এসেছে। ছোট ছোট গাছের ফল দেখে অনেকের উৎসাহ বেড়েছে মাল্টার প্রতি। কেউ কেউ উদ্যোগ নিয়েছেন আগামীতে মাল্টা চাষে মনযোগ দিবেন। জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল আলম খান বলেন, লেবু জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়াতে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। কৃষি অফিসের পরামর্শে মাল্টা চাষে ঝুঁকছে কৃষকরা। শুকনো মৌসুমে মাল্টার উৎপাদন বাড়াতে গাছের পরিচর্চায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। এই প্রযুক্তিতে পানি ও সার একসঙ্গে দেয়া যাবে ড্রিপ ইরিগেশনের মাধ্যমে। তিনি বলেন, যারা মাল্টা চাষ করেছে তাদের ফলন ভালো হয়েছে। এ বছর নতুন মাল্টা চাষি ৪৫ জন বেড়েছেন। অফিস থেকে প্রদর্শনী প্রাপ্ত কৃষকদের ৬ রকমের সার, কীটনাশক, ছত্রাক নাশক, সিকেচার, স্প্রে মেশিন এবং মাটি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়াও শুকনো মৌসুমের জন্য মালচিং পেপার বিতরণ করা হয়েছে।