মৌসুমে শতকোটি টাকার মাছ বিক্রি হয় পদ্মাপাড়ে
দাবি মৎস্যকেন্দ্র স্থাপনের
প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
এ.এইচ.এম আরিফ, কুষ্টিয়া
পদ্মার তীরবর্তী একটি অঞ্চল কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলা। এ উপজেলার ফিলিপনগর, মরিচা ও রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী এই চারটি ইউনিয়ন একেবারে নদীঘেঁষা। এখানকার প্রায় ৯০০ জেলের জীবিকার একমাত্র মাধ্যম হলো মাছশিকার। এছাড়া বাড়তি আয়ের আশায় নদীপাড়ের লোকজন কমবেশি মাছ ধরেন। প্রতিদিন এসব মাছ তারা বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন পদ্মা তীরবর্তী অপরিকল্পিত ঘাটসহ এলাকার আশপাশের বাজারগুলোতে। আর নদীর এসব টাটকা মাছের বেচাকেনা চলে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি।
যার ক্রেতা হিসাবে নদীর ঘাটের বাজারে আসেন স্থানীয়সহ আশপাশের জেলার মানুষ ও পাইকাররা। ঘাটগুলো থেকে প্রতিদিন মাছ বিক্রি হয় কয়েক লাখ টাকার। সেই হিসাবে বছরে মাছ বিক্রির পরিমাণ দাঁড়ায় শতকোটি টাকার বেশি। এসব হাটে সবচেয়ে বেশি দেখা মেলে চিংড়ি, পিউলি, চ্যালা, ঘাউরা, বাঁশপাতা, বাইম, বেলে, ট্যাংরাসহ নানা পদের মাছ। এগুলো আকারভেদে দেড়শ’ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা কেজিতেও বিক্রি হয়। পদ্মা তীরবর্তী হওয়া সত্ত্বেও বৃহত্তর এই উপজেলায় এখন পর্যন্ত কোনো মৎস্য বিক্রয়কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। যার কারণে জেলেরা তাদের মাছের সঠিক দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একইভাবে দ্রুত মাছ বিক্রিতে পড়ছেন বিড়ম্বনায়। তাই এলাকার জেলেরা দাবি তুলেছেন, এখানে সরকারি উদ্যোগে একটি মৎস্য বিক্রয়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার। এটা করা হলে শুধু জেলে পরিবারের সমৃদ্ধিই বয়ে আনবে না, এ অঞ্চলের মৎস্য খাতভিত্তিক অর্থনীতিরও স্ফীতি ঘটবে। স্থানীয় জেলে সিদ্দিক ও জামাল জানান, প্রতিদিন পদ্মা নদী থেকে তারা যে পরিমাণ মাছ শিকার করেন, তা বিক্রির জন্য তীরবর্তী ঘাট ও স্থানীয় বাজারের হাটগুলোতেই নিয়ে আসেন। কিছু পরিমাণ পাঠানো হয় কুষ্টিয়া শহরের আড়তেও। এতে প্রতিদিন যা আয় হয়, তা দিয়েই চলে তাদের সংসার ও দৈনন্দিন খরচ। জেলে দলের নাজমুল জানান, আকার ও মাছের ধরনের ওপর নির্ভর করে মাছের দাম নির্ধারণ হয়। আবার ক্রেতার থেকে আমদানি বেশি হলে এসব মাছের দর কমে যায়। মাছ কিনতে আশা তুষার রহমান বলেন, ‘সকালে ঘাটে এসেছি নদীর টাটকা মাছ কিনতে। যদিও এখানে দাম বেশি। তবে, একেবারে ফ্রেশ এসব মাছের স্বাদ অনেক ভালো। দৌলতপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমেদ বলেন, প্রতি মৌসুমের মে মাসের শেষ সময় থেকে ডিসেম্বরের আগ পর্যন্ত নদীতে মাছ বেশি পাওয়া যায়। প্রতিদিন কী পরিমাণ মাছ শিকার বা বিক্রি হয়, এর সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও গড়ে অন্তত দেড় হাজার কেজি মাছ বিক্রি হয়। যার থেকে বছরে কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকার বেশি আয় হওয়ার কথা। সরকারিভাবে একটি বিক্রিয়কেন্দ্র করার বিষয়ে ওই কর্মকর্তা জানান, আমরা একাধিকবার প্রস্তাব পাঠিয়েছি, তবে, তা বাস্তবায়ন হয়নি। এখানে একটি স্থায়ী মৎস্য বিক্রয়কেন্দ্র তৈরি করা সম্ভব হলে এই খাতের আরো প্রসার ঘটবে বলে তিনি মনে করেন।