ঢাকা ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অসুস্থ হওয়ায় ভেঙেছে সংসার

বাঁচতে চান সুমাইয়া
অসুস্থ হওয়ায় ভেঙেছে সংসার

অসুস্থতার কারণে বছরখানেক আগেই সংসার ভেঙেছে সুমাইয়া খাতুনের (১৭)। দুই পায়ের ‘হিপ জয়েন্টে’র যে সমস্যায় সংসার ছিন্ন হয়েছিল, সেই সমস্যা এখন আরো গুরুতর। হাঁটতে হয় অন্যের সাহায্য নিয়ে। রুগ্ন শরীর নিয়ে এখন ভ্যানচালক দরিদ্র বাবার সংসারে তার ঠাঁই। সহায় সম্বল সব বিক্রি করে তার চিকিৎসা করিয়েছেন বাবা। সুস্থ হতে আরো উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। ভ্যানচালক বাবার পক্ষে সেই চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকলেও অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারেন না বলে নিজেকে বোঝা মনে হচ্ছে সুমাইয়া। কথাগুলো বলতে বলতে সুমাইয়ার চোখের জল গড়িয়ে পড়ে। সুমাইয়া গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের কান্দিপাড়া গ্রামের দরিদ্র জাহিদুল ইসলাম ও সাহেদা বেগমের কন্যা। ওই গ্রামেই দুই শতক জমির ওপর দুই কক্ষের টিনের ঘরের এক কক্ষে থাকেন সুমাইয়া। অন্যটিতে থাকেন বাবা-মা। সুমাইয়া স্বামীর সংসার থেকে ফিরে আসায় ভাই সুজন আলীও শ্বশুরবাড়িতে পাড়ি জমিয়েছেন।

সুমাইয়া বলেন, দুই বছর আগে যখন তার বিয়ে হয়- তখনও তিনি সুস্থ ছিলেন। শ্বশুরবাড়িতেই প্রথমে কোমড়ের ডান পাশের ‘হিট জয়েন্টে’ যন্ত্রণা শুরু হয়। ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে পুরো ডান পায়ে। একপর্যায়ে হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে উন্নতি না হওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে বাপের বাড়িতে ফেরত পাঠান। সেই থেকে এখনো বাপের কাছেই আছেন তিনি।

সুমাইয়ার বাবা-মা বলেন, দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে সুমাইয়া ছোট। অসুখ হওয়ায় মেয়েটির সংসার ভেঙেছে। ভ্যান চালিয়ে এবং এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সাধ্যমতো চিকিৎসা করিয়েছেন তিনি।

তাতেও লাভ হয়নি, ব্যাথায় কাঁতরায়। সমস্যাটি ডান পায়ের পর বাম পায়ের ‘হিপ জয়েন্টেও’ শুরু হয়েছে। নিজে হাঁটতে পারেন না। অসুস্থ হলেও নিজের মেয়েকে ফেলতে পারিনি। গোসলসহ প্রয়োজনীয় সব কাজে সুমাইয়াকে সাহায্য করতে হয়। অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। মেয়েকে সুস্থ করতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সহায়তা চেয়েছেন।

তবে সুমাইয়ার চিকিৎসা খরচ জোগাতে মানবতার ফেরিয়ালা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন ওই এলাকার মোক্তার হোসেন নামের এক যুবক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসহায় সুমাইয়ার এসব সমস্যা নিয়ে কথা বলেন তিনি। সেখান থেকে যা সাহায্য সহযোগিতা পান সেটা সুমাইয়ার চিকিৎসা খরচে ব্যয় করেন। এ ধরনের অসহায় মানুষের পাশে থেকে সবাইকে মানবিক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মশিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারী বলেন, অনেকদিন ধরেই সুমাইয়া অসুস্থতায় ভুগছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে তার কাছে আবেদন দিলে চিকিৎসার জন্য সাধ্যমতো আর্থিক সহায়তা দেবেন তিনি।

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন, অসুস্থতার কারণে সুমাইয়ার সংসার ভাঙার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। অসুস্থ এই কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত