চিংড়ির রেণু আহরণে ধ্বংস হচ্ছে মাছের পোনা ও জলজ উদ্ভিদ

প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ভোলা প্রতিনিধি

ভোলার মেঘনা, তেঁতুলিয়া ও সাগর উপকূলের বিভিন্ন চর-চরাঞ্চলে অবৈধভাবে অবাধে গলদা ও বাগদা চিংড়ির রেণু আহরণ করছে জেলেরা। এসব চিংড়ির রেণু আহরণে প্রতিনিয়তই ধ্বংস হচ্ছে নানা প্রজাতির জলজ প্রাণি ও মাছের পোনা। চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া লঞ্চঘাট, বেতুয়া স্লুইজ গেট, নতুন স্লুইজ গেট, সামরাজ মৎস্য ঘাট, হাজারিগঞ্জ আট কপাট, পাঁচ কপাট, মাইনুদ্দিন মৎস্যঘাট, খেজুরগাছিয়া, মাইনকা খালের মাথা, ঢালচরের সাগর উপকূলসহ তারুয়া চরের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে প্রতিদিন চিংড়ির লাখ লাখ রেণু আহরণ করছে জেলেরা। অক্টোবরের শেষ সময় থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় পাঁচ মাস সাগরের উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় কয়েক হাজার নারী-পুরুষ জেলেরা মিলে চিংড়ি রেণু আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় সরকারি নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই প্রজনন মৌসুমে অবাধে চিংড়ি রেণুসহ অন্যান্য মাছ শিকার ও ক্রয় বিক্রয় করছেন জেলেরা। সরে জমিনে দেখা গেছে, রেণু আহরণকারীরা মশারি জাল ও ঠেলা জালে অন্যান্য মাছের পোনা ও জলজ প্রাণি ফেলে দিয়ে শুধু গলদা ও বাগদা চিংড়ির রেণু সংগ্রহ করছে। প্রভাবশালী মহল চড়া দামে ক্রয় করে প্লাস্টিকের ড্রাম ও মাটির টালিতে করে খুলনা, বাগেরহাট, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও যশোরের বিভিন্ন চিংড়ির ঘেরে অধিক মুনাফায় বিক্রি করছে। জানা গেছে, প্রশাসনের কতিপয় ব্যক্তি প্রতি ট্রলার থেকে মাসিক চাঁদা কালেকশনের মাধ্যমে চরফ্যাশন উপজেলা থেকে জাটকা ইলিশসহ প্রতিদিন বিভিন্ন রুটে লক্ষাধিক চিংড়ি রেনু পাচারে সহযোগিতা করছে। আসলামপুর এলাকার মৃদুল জানান, বাগদা রেনু আহরণের জন্য প্রতিবছর এ মৌসুমে চলে আসেন, এক ইঞ্চি থেকে দুই ইঞ্চি বাগদা ও গলদা চিংড়ি রেণু একশত পিস ২ শত টাকায় মহাজনদের কাছে তিনি বিক্রি করেন। একই এলাকার বিবি আয়শা বেগম বলেন, আমি ও আমার ছেলে প্রতিবছর রেনু আহরণ করে বিক্রী করি। অভাবের সংসার তাই বেঁড়িবাধের কিনারায় বাস করি। অবৈধ জেনেও পেটের দায়ে এ কাজ করছি। নাজিম বলেন, তিনি প্রতি বছরের এ মৌসুমে বেতুয়া, পুরান স্লুইজ ও নতুন স্লুইজগেট এলাকায় চিংড়ির রেণু একশত পিস ৬০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আড়তদার বলেন, চিংড়ির রেণু প্রতি পিস এক ইঞ্চি থেকে একটু বড় সাইজের রেণুগুলো ২ থেকে আড়াই টাকায় কিনলেও সব কিছু ম্যানেজ করে প্রতি পিস রেণুর দাম পড়ে ৪ থেকে ৫ টাকা। স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবাধে ধ্বংস করা হচ্ছে বিভিন্ন মাছের পোনা, জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নওরীন হক বলেন, আমরা তথ্য পেলেই রেণু উদ্ধারসহ অপরাধীদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসি। খোঁজখবর নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।