ডানার প্রভাবে জলাবদ্ধ এলাকায় দুর্ভোগ বেড়েছে

প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে ভারি বৃষ্টির পাশাপাশি ৫২ বিলের পানি ২৭ বিলে ঢুকে আসায় যশোরের কেশবপুরের জলাবদ্ধ এলাকার মানুষের অবস্থা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে কেশবপুর উপজেলার সুফলাকাটি ইউনিয়নের বেতিখোলা গ্রামের অধিকাংশ মানুষের বাড়িতে উঠে এসেছে পানি। ওই গ্রামের মানুষ যাতায়াতের জন্য বাড়ির ভেতর বাঁশের সাঁকো ও কলার ভেলা তৈরি করে নিয়েছেন। গত দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে কেশবপুরের ১১টি ইউনিয়নের পাশাপাশি পৌর এলাকার জলাবদ্ধ পানি বেড়ে গেছে। এতে মানুষের ভোগান্তি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার বেতিখোলা গ্রামের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, দু’দিনের বৃষ্টিতে তাদের গ্রামের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষের বাড়িতে এখন পানি। এলাকার মানুষ বাড়ি থেকে বের হতে বাঁশের সাঁকোর পাশাপাশি কলার ভেলা তৈরি করে যাতায়াত করছেন। ২৭ বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক বাবুর আলী গোলদার বলেন, ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে কেশবপুরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বাতাসে কৃষকের উঁচু জমির অধিকাংশ আমন ধান পড়ে গেছে। তা ছাড়া উপজেলার পাঁজিয়া, সুফলাকাটি ও গৌরীঘোনা ইউনিয়নে জলাবদ্ধতার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।

এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুফলাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম মুনজুর রহমান বলেন, যশোরের অভয়নগর ও মণিরামপুর উপজেলার ৫২ বিলের পানি মণিরামপুরের কোনাখোলা বাজারের উত্তরপাশ দিয়ে ২৭ বিলে ঢুকে পড়ায় তার ইউনিয়নের বেতিখোলা, নারায়ণপুর এবং কালিচরণপুর এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া দানার প্রভাবে ভারি বৃষ্টিতে এলাকার জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিকদার বলেন, ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে নদ-নদীতে জোয়ারের প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে কেশবপুর অঞ্চলের পানি নদ-নদী দিয়ে ধীর গতিতে নামছে।

উল্লেখ্য, বৃষ্টি ও নদ-নদীর উপচে পড়া পানিতে কেশবপুরের ১০৪টি গ্রাম দুই মাস ধরে জলাবদ্ধ হয়ে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। যশোর-চুকনগর সড়কের কেশবপুর অংশে রাস্তার পাশে টংঘর বানিয়ে এলাকার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

তিন হাজার ৬৪০টি মাছের ঘের, দুই হাজার ৪২০টি পুকুর ভেসে যেয়ে এবং এক হাজার ৮৩০ হেক্টর আমন, ২৩৯ হেক্টর সবজিসহ পান, তুলা, মরিচ ও তরমুজ পানিতে তলিয়ে কৃষকের ১২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে ৭০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রমও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।