বাবার গলা কাটার সময় মাথা চেপে ধরেন ছেলে
প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
শাহজাহান সাজু (কিশোরগঞ্জ)
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে বন্ধুদের সাথে নিয়ে বাবাকে জবাই করে হত্যা করেন ছেলে। হত্যার সময় ধানখেতে বাবার মাথা চেপে ধরেন ছেলে সোহেল মিয়া। গতকাল শনিবার পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী। পুলিশ সুপার জানান, গত ২০ অক্টোবর দুপুরে বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের সুলতানপুর এলাকার একটি ধানখেত থেকে হাত-পা বাঁধা গলাকাটা একটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত নিবু মিয়া (৬৫) বাজিতপুর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের মৃত সুন্দর আলীর ছেলে। ওইদিন নিহতের ছেলে আব্দুর রহমান হৃদয় বাদী হয়ে বাজিতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলা করার পর পুলিশের একটি দল প্রযুক্তিগত ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বাজিতপুর উপজেলার দক্ষিণ পিরিজপুর বাজার এলাকার আ. হাই মেম্বারের হোটেল থেকে হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত আসামি বাবুল মিয়াকে আটক করে। আটক আসামি স্বীকারোক্তি দেয় যে নিবু মিয়ার সাথে থাকা ৭০ হাজার টাকার জন্য তাকে খুন করেছেন তারা। তার দেয়া তথ্য মতে হত্যাকাণ্ডে সাথে জড়িত নিহত নিবু মিয়ার ছোট ছেলে সোহেল মিয়াসহ আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে জবানবন্দিতে বাবাকে জবাই করে হত্যা সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন ছেলে সোহেল মিয়া। পুলিশ সুপার আরও জানান, ১ বছর আগে নিহত নিবু মিয়া জমি বিক্রি করেন ২১ লাখ টাকা। সেই টাকা হতে ৬ লাখ টাকা দিয়ে তার ছোট ছেলে সোহেল মিয়াকে বিদেশে পাঠায়। কিন্তু সোহেল বিদেশে থেকে ছয়মাস পর দেশে চেলে আসলে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন তিনি।
সংসার চালাতে এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে পুরাতন অটোরিকশা কিনেন সোহেল। কিন্তু সোহেল তার বাবার কাছে জমি বিক্রির আরো যে টাকা ছিলো তা তাকে দেয়ার জন্য বলে। এই টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। তাই নিবু মিয়া টাকাগুলো তার সাথে সাথে রাখতেন। ঘটনার দিন তার বাবার কাছ থেকে টাকা গুলো নেয়ার জন্যই সে তার বন্ধুদের নিয়ে তার বাবা নিবু মিয়াকে জবাই করে হত্যা করেন। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আটক বাবুল মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দিয়েছেন এবং টাকার জন্য ভিকটিম নিবু মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া তাদের নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলেও জবানবন্দিতে জানায় বাবুল। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত অন্যান্য আসামিরা হলেন, নিহত নিবু মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়ার, তিন বন্ধু ইলেকট্রিশিয়ান বাবুল মিয়া, কসাই নজরুল ইসলাম ও রাজমিস্ত্রি সুমন মিয়া।