হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জের পূর্ব লেঞ্জাপাড়া ও আলাপুরে খোয়াই নদীর বাঁধ রক্ষায় বালুবোঝাই বেপরোয়া ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ করেছে স্থানীয় লোকেরা। জানা গেছে, শায়েস্তাগঞ্জে খোয়াই নদীর ভাঙন আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই পুনরায় শুরু হয়েছে বালু উত্তোলনের তাণ্ডব।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। চক্রটি নদীর বাঁধ কেটে ট্রাক্টর দিয়ে বালু বিক্রি করে। এতে নদী তীরে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এদিকে আগস্টে ভারত থেকে আসা ঢলের কারণে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হওয়ার খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সেই সময় বাঁধ কেটে বালু না নেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই চক্রটি নদীর বাঁধ কেটে বালু বিক্রি শুরু করে। অবশেষে খোয়াই নদীর বাঁধ রক্ষায় স্থানীয় লোকেরা বালুবোঝাই ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ করে। কিন্তু বালু খেকোরা এসব মানতে নারাজ। গত বুধবার দিবাগত রাতে বালু খেকোরা বালুবোঝাই ট্রাক্টর চালানোর চেষ্টা করে। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে ট্রাক্টর চলাচলের পথে কাঠের খুঁটি স্থাপন করে। বালু খেকোরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বালু বিক্রি অব্যাহত রাখতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছে। সরেজমিনে জানা গেছে, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার পূর্ব লেঞ্জাপাড়া এলাকায় দিয়ে বেপরোয়া বালু বোঝাই ট্রাক্টর চলাচলে নদীর বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। এর ফলে নদীর তীরে ভাঙন শুরু হওয়ায় স্থানীয়দের বাড়িঘর এবং ফসলের জমি হুমকির মুখে পড়েছে। তাই স্থানীয় লোকেরা বাধ্য হয়ে বেপরোয়া ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ করেছেন। কিন্তু বালুখেকোরা ট্রাক্টর চলাচলের চেষ্টা করে যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, এভাবে আর চলতে দেওয়া যায় না। বেপরোয়া ট্রাক্টর চলাচলে নদীর বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। গত আগস্ট মাসে ভারত থেকে আসা ঢলের কারণে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, তখন স্বেচ্ছাশ্রম বালুভর্তি বস্তা ফেলে কোনোভাবে ভাঙন রোধ করতে সক্ষম হয়।
কিন্তু বালু উত্তোলন শুরু হওয়ায় তাদের সেই আতঙ্ক পুনরায় ফিরেছে এসেছে। তাই বাঁধ রক্ষায় কাঠের খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। বাঁধ সংস্কারের কথা ছিল। কিন্তু করা হয়নি। বরং বালু চক্রটি খুঁটি সরিয়ে বালু বোঝাই ট্রাক্টর চলানোর চেষ্টায় রয়েছে। বালুবোঝাই ট্রাক্টর চলাচল বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয়রা। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার মিতা বলেন, কোনোভাবেই বাঁধের ক্ষতি করা যাবে না। যারা বাঁধের ক্ষতি করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।