৫ বছরেও শেষ হয়নি বিদ্যালয় ভবনের কাজ

প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ভোলা প্রতিনিধি

ভোলার তজুমদ্দিনে ফজিলতুননেছা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ ঠিকাদারের গাফিলতি ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর উদাসীনতায় ৫ বছর পরও শেষ হয়নি। এতে কক্ষ সংকটে প্রতিনিয়ত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ওয়াশব্লক সংকটে ভোগান্তিতে পড়ছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ভবনের রুমের দরজার চৌকাঠে ব্যবহার করা হয়েছে একেবারেই উসার ও নিন্ম মানের কাঠ। এ ছাড়াও নির্মাণ সামগ্রী বিদ্যালয়ের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় যে কোন মুহূর্তে দূর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। জানা গেছে, ৩ কোটি ৩৩ লাখ ৮২ হাজার টাকা ব্যয়ে ফজিলতুননেছা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ৫ তলা বিশিষ্ট নতুন একাডেমিক ভবনের কাজের দায়িত্ব পেয়েছেন মেসার্স এসএস এন্ড এমটি এন্টারপ্রাইজ নামের গোপালগঞ্জের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি বাস্তবায়ণ না করে সাব-ঠিকাদারী দিয়ে কাজটি বাস্তবায়ণ করছেন। ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে। প্রকল্পের মেয়াদ অনুযায়ী দুই বছরে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা এখনো শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার। কাজের আদেশ অনুযায়ী ২০২২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কাজ শেষ করে কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করার কথা থাকলে, কবে নির্মাণকাজ শেষ হবে, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতেও পারছেন না। নতুন ভবনের আশায় পুরোনো ভবন ভেঙে এবং জায়গা ছেড়ে দিয়ে এখন বেকায়দায় পড়েছেন বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। ভবনের কাজ শুরুর প্রায় ৫ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো অর্ধেক কাজ বাকি রয়ে গেছে। যে কারণে প্রতিনিয়ত বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ঠিকাদারের গাফিলতি ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ভোলার উদাসীনতায় নির্ধারিত সময়ে নতুন ভবনের কাজ শেষ না হওয়ায় বিদ্যালয়ের পুরান ভবনের ব্যবহারের অনুপযোগী ৪টি রুমে পাঠদান করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। যে সব রুমে বর্ষার সময় ছাদ বেয়ে পানি পড়ে। অন্যদিকে ওয়াসব্লক না থাকায় ছাত্রীরা পড়ছেন সব বেশি সমস্যায়। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, ৩ বছর আগেই ভবনটির কাজ শেষ করে বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও এখনো কাজই শেষ হয়নি। কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে বলা অনিশ্চিত। একদিন কাজ চললে আবার একমাস কাজ বন্ধ থাকে। ঠিকাদারের এমন গাফিলতির কারণে স্কুলের ভিতরে যে কেউ অবাধে প্রবেশ করায় ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। নির্মাণ সামগ্রী বিদ্যালয়ের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় যে কোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। নতুন ভবনের কাজ যেটুকু হয়েছে তাতে দেয়ালের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে।

আবার পুরো ভবনের দেয়ালে শেওলা পড়ে গেছে। স্কুল ভবনের কাজ বাস্তবায়ণকারী মো. তানিম বলেন, আমি এসএস এন্ড এমটি প্রতিষ্ঠানের কেউ না। কাজটি ক্রয় করে বাস্তবায়ণ করছি। তবে প্রতিষ্ঠান যথা সময়ে কাজের সাইড বুঝ দিতে না পারায় কাজ শুরু করতে দেরি হওয়ায় যথা সময়ে কাজ শেষ করতে পারিনি। তবে আগামী ডিসেম্বর নাগাদ কাজ শেষ হবে বলে আশা করি।

ভোলা জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সালেহ নুর নবী বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির বিষয়ে অধিদপ্তরে চিঠি দেয়া হয়েছে। কাজে গাফিলতির কারণে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর এসএস এন্ড এমটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভূক্ত করেছেন। তারা আর কখনো শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কোনো টেন্ডারে অংশ নিতে পারবে না। তারপরও যত দ্রুত সম্ভব আমরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছি।