ফরিদপুরে আমন ধানে ছত্রাক জাতীয় রোগ লক্ষীর গু’র আক্রমন দেখাা গেছে। বিনা-১৭, ব্রি- ৪৯ ও ৭৫ জাতের ধানে এই রোগ বেশি দেখা যাচ্ছে। একাধিক বার অনুমোদিত ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেও আশানুরূপ প্রতিকার পাচ্ছেন না চাষিরা। তাই ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা করছেন তারা জানাচ্ছেন। ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোলপুর ইউনিয়নের গেপালপুর ব্লকের গরীব উল্লারার পাড়ার চাষি মো. শহিদুল ইসিলাম বলেন, এ বছর বিনা-১৭ ও ব্রি-৭৫ মিলে প্রায় ১২ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছি। একটু আগাম বলে প্রতি বছরই এ জাতের ধান চাষ করা হয় এবং প্রতি বছরই এই লক্ষীর গু নামক রোগর আক্রমণ হয়ে থাকে। তবে অন্য বছরগুলোর তুলনায় এ বছর এই রোগের ক্ষতির মাত্রা অনেক বেশি। দুই বার ছত্রাকনাশ প্রয়োগ করার পরও আমার জমির প্রায় ৩৫ ভাগ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। অম্বিকাপুর ইউনিয়নের অম্বিকাপুর ব্লকের চাষি মো. মাসুদ পাল বলেন, ফলন ভালো ও আগাম জাত বলে বিনা-১৭ জাতের ধান চাষ করেছি। এতদিন খেত খুব ভালো ছিল কিন্তু শীষ পরিপুষ্ট হওয়া সময়ে লক্ষীর গু’র আক্রমণ ধানের ক্ষতি করছে। আমি দুই বার ওষুধ ছিটিয়েও ক্ষতির হাত থেকে ধানকে রক্ষা করতে পারিনি। ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোলপুর ইউনিয়নের গেপালপুর ব্লকে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস হোেেসন বলেন, ব্রি-৪৯, ৭৫ ও বিনা-১৭ জাতর ধানে প্রতি বছরেই এই ছত্রাকের (লক্ষীর গু) আক্রমণ দেখা যায় এবং সাধাণত একবার কার্বনডাজিম বা প্রপিকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক প্রযোগ করলে তা সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর এই রোগ দমনে চাষিদের দুই থেকে তিন বার ছত্রাকনাশক প্রযোগ করতে হচ্ছে। তবে তাতেও ধানকে ক্ষতির হাত থেকে পুরোপুরি রক্ষা করা যাচ্ছে না। ফসলের বাইলনাশক বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল এগ্রোভেট লি. এর ফরিদপুর জেলা কমাকর্তা মো. আজাদ মণ্ডল জানান, ছত্রাক জাতীয় রোগ লক্ষীর গু দমনে আমাদের কোম্পানির কার্বনডাজিম গ্রুপের ছত্রানকাশক ‘সিনোডাজিম’ একবার প্রয়েগেই বিগত বছরগুলোতে ভালো ফল পাওয়া গেছে। কিন্তু এ বছরে কোনো খেতে একাধিকবার সিনোডাজিম প্রয়োগ করতে হচ্ছে। ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, লক্ষীর গু ধানের একটি ছত্রাকজনিত রোগ। ব্রি-৪৯, ৭৫ ও বিনা-১৭ জাতর ধানে এই রোগের আক্রমণ দেখা যায়। এ বছরের আবহাওয়া ধান উৎপাদনে অনুকূল এবং একই সঙ্গে এই ছত্রাকেরও জন্যেও অনুকূল। তবে অন্যান্ন জেলার তুলনায় ফরিদপুরে এই রোগের আক্রমণ কম হয়। লক্ষীর গু’র আক্রমণ থেকে ধানকে সুরক্ষিত রাখতে আমরা চাষিদের করণীয় লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। তিনি আরো বলেন, লক্ষীর গু ধানের জন্য খুব বেশি ক্ষতিকর নয়, তবে যে সকল জমিতে এই রোগের আক্রমণ হয়েছে সেই ধান কেটে মাড়াই করে রোদে শুকালে তা ঠিক হয়ে যাবে।