অদম্য নারীরা এখন অন্যের প্রেরণা

প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মসিউর রহমান জেহাদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

গৃস্থালী কাজের পাশাপাশি নারীরা এখন প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তা হয়ে অন্যের অনুপ্রেরণা। সরকারি দপ্তরগুলোয় প্রশিক্ষণ নেয়ার পাশাপাশি অন্যের সফলতায় উদ্বুব্ধ হয়ে অনলাইন ও সরাসরিভাবে পণ্য বেচাকেনায় ঝুঁকছেন তারা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের অনেক নারী পারিবারিক সহায়তায় সফল হলেও হোঁচটও কম খাননি অনেক উদ্যোক্তা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তারা অনলাইন ও সরাসরি পণ্যসামগ্রী বিক্রি করে নিজেদের অর্থনৈতিক শক্তি বাড়িয়ে তুলছেন প্রতিনিয়ত।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন তৃণমূলে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে নারীরা জড়াচ্ছেন বেচাকেনার এই উদ্যোগে। জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাঁচটি উপজেলার মধ্যে সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা বেশি। এখানকার নারীরা আম, আম দিয়ে বানানো হরেক রকমের আচার, বুটিক জিনিসপত্র, আটার নাড়ু, ছাতু, কুমড়ো বড়ি, বিভিন্ন ধরনের তেল, কেক, আখের গুড়, নকশি কাঁথা প্রভৃতি বানিয়ে বিক্রি করছেন। এমন নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা জেলায় সাড়ে ছয় শতাধিক। নারী উদ্যোক্তারা বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাবের পর থেকে জেলায় বেড়েছে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা। গত তিন বছরের ব্যবধানে জেলায় উদ্যোক্তা বেড়েছে প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক। তাদের বেশিরভাগই এখন প্রতিষ্ঠিত। অনলাইন পণ্য বেচাকেনা আর দক্ষতা কম থাকায় অনেকই এ উদ্যোগে জড়িয়েও অনিয়মিত; এমন নারীর সংখ্যাও কম নেই এ জেলায়। তারা আরো জানায়, সরাসরি পণ্যসামগ্রী বিক্রি কম করেন উদ্যোক্তারা। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পেইজ, গ্রুপ খোলেন এবং সেখানে নিজের পণ্যসামগ্রী পোস্ট দিয়ে বিক্রি করে থাকেন। শরিফা খাতুন নামে এক নারী বলেন, কলেজেপড়ুয়া ছাত্রীরা অনলাইনে পণ্য বেচাকেনা করে থাকেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পেজ, গ্রুপ খুলে নিজের পণ্যের প্রচারণা চালায়। পরে অর্ডার আসলে ভোক্তার কাছে যত্নের সঙ্গে পণ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়। অনলাইনে বিক্রি করা নারীদের পণ্য পৌঁছে দেয়ার প্রধান মাধ্যম হচ্ছে কুরিয়ার সার্ভিস।

আরেকজন সফল উদ্যোক্তা রুজানা খানম ইমু। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২০১৯ সালে কেক বানানো দিয়ে শুরু হয় তার যাত্রা। তিনি বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের কেক বিক্রি করে আর্থিকভাবে সাবলম্বী। জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুরুর দিকে তেমন রেসপন্স পাওয়া যেত না, কিন্তু এখন আমার কেকের চাহিদা রয়েছে। ফেসবুকে আমার পেইজে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ফলোয়ার রয়েছে। এখান থেকে প্রতিদিন কেকের অর্ডার আছে।

কেক বিক্রি করে মাসে ৩০-৫০ হাজার টাকা আয় হয়। নূর-ই-জান্নাত নামে আরেক উদ্যোক্তা বলেন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে সবচেয়ে ভালো জিনিসটা প্রস্তুত করে ভোক্তার হাতে দেয়ার চেষ্টা করি। অনলাইনে ব্যবসা করার সুবাদে আমরা গোটা দেশের মানুষের কাছে এসব খাদ্যপণ্য পৌঁছে দিয়ে থাকি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান ইসয়াসমিন সুলতানা রুমা বলেন, যেসব নারীরা প্ররিশ্রম করে নিজের অবস্থানকে দৃঢ় করার পাশাপাশি শত বাধাতেও দমে যায় না; তারাই কেবল উদ্যোক্তা হতে পারে।