আলোর পথে চা বাগানের সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সুরমা চা বাগানের হতদরিদ্র সুবিধা বঞ্চিত পিছিয়ে চা শ্রমিক জনগোষ্ঠীর অনাথ ও অসহায় দু শতাধিক সুবিধা বঞ্চিত শিশুকে আলোর পথ দেখাচ্ছে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সুষম খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা, অধিকার বাস্তবায়নসহ আলোর পথ দেখাচ্ছে। উপজেলার সুরমা চা বাগানে মাহজিল শিশু উন্নয়ন প্রকল্প ২০১০ সাল থেকে কমপেশান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সহযোগিতায় সিলেট প্রেস বিটারিয়ান সিনড’র পরিচালিত এবং দেশি বিদেশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও দাতা গোষ্ঠীর অর্থায়নে এই প্রকল্পে বাগানে চা শ্রমিক হত দরিদ্র ও অনাথ শিশুরা এই সুবিধা পাচ্ছে। সিলেট প্রেস বিটারিয়ান সিনডের নেতা সুদর্শন পান তাঁতী জানান, ২০১০ সাল থেকে মাহজিলে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ঝড়ে পড়া হতদরিদ্র ছাত্র ছাত্রীদের এই প্রতিষ্ঠানে এ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। ১ম শ্রেণি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণিতে ৩০০ এর অধিক শিক্ষার্থী রয়েছে।
৬ জন কেয়ার গিভার শ্রেণিভিত্তিক ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করেন। শিশুদের শারিরীক ও মানসিক বিকাশের জন্য সপ্তাহে ৫ দিন দুপুরে ডিম, দুধ, মাছ , মাংস, কলা ,ফল, খিচুরি পরিবেশন করা হয়। প্রতিদিন ছাত্র ছাত্রীদের ওজন মেপে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। কোনো ছাত্র -ছাত্রীর অসুস্থ হলে এই প্রতিষ্ঠান থেকে চিকিৎসার উদ্যোগে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা প্রতিমাসে স্বাস্থ্যসেবার খোঁজ খবর নেন। প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত ছাত্র- ছাত্রীদের শিক্ষা সহায়তা উপকরণ, খাতা কলম, বই পুস্তক, বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক দুর্লব পান্না দির্বা জানান, স্থানীয় লোকজন শিশুদের অধিকার সম্পর্কে এখনো পুরোপুরি সচেতন নয়। তাই সবার সহযোগীতা পেলে বড় পরিসরে সমাজে পিছিয়ে পড়া দরিদ্র শিশুদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা দেয়া সম্ভব। সরকারি পৃষ্ট পোষকতা পেলে এই শিশু উন্নয়ন প্রকল্পটির আরো বিস্তৃতি লাভ ঘটত। অবহেলিত চা শ্রমিক শিশু সন্তান জন্মের পর থেকেই অনাদরে, অবহেলায় বড় হতে থাকে।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুষম খাবার বলতে যা বুঝায় এসব শিশুদের ভাগ্যে কিছুই জুটে না। চা শ্রমিকরা যে তলব (টাকা), রেশন পায় তা দিয়ে তাদের সংসার চালানো কঠিন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে এ সুবিধা পাওয়ায় এলাকাবাসী এ প্রতিষ্ঠানের প্রতি খুবই আন্তরিক। চা বাগানের ব্যবস্থাপক বাবুল সরকার জানান, এ প্রতিষ্ঠানে অবহেলিত শিশুরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাবারের সুবিধা পাচ্ছে। এতে সাধারণ শ্রমিকরা উপকৃত হচ্ছে।