দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সাথে একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুটে নাব্য বাড়াতে ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করেছে বিআইডব্লিউটি। ভোলার নদীপথে যোগাযোগের সহজমাধ্যম ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুর নৌরুট। ২৬ কিলোমিটার পথে ১৫-২০টি ডুবোচর জেগে ওঠায় ৩ ঘণ্টার পথে যেতে সময় লাগছে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা।
এতে নৌযান চলাচলে মারাত্মক বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে যেতে না পারায় প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রী ও নৌযান শ্রমিকদের। বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে তিনটি ফেরি নিয়ে শুরু হয় ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুট। আর ৩টি ফেরি নিয়ে শুরু হয় ভোলার ভেদুরিয়া আর বরিশালের লাহারহাট ফেরি পারাপার সংযোগ। বরিশাল থেকে জেলা শহর ভোলা হয়ে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরের ইলিশা ঘাট দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২৬ কিলোমিটারের এ নৌপথে বাস ও ট্রাকসহ বিপুলসংখ্যক মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। বছরের নভেম্বর থেকে মে এ সাত মাস শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদী ও তৎসংযোগ খালে পানি কম থাকে। ফলে নাব্য সংকটে ডুবোচরে ফেরি ও লঞ্চ আটকে থাকে।
ভোলা থেকে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার নৌপথের রহমতপুর, লালবয়া, মতিরহাট, কাটাখালিসহ ৮টি পয়েন্ট ডুবোচর জেগে উঠায় ওই পয়েন্টে নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ভুক্তভোগী যাত্রী ও নৌযান শ্রমিকরা জানান, এ রুট দিয়ে প্রতিদিন ৫টি ফেরি ও ১৫টি লঞ্চ চলাচল করে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুর নৌরুটে মেঘনা-তেঁতুলিয়ার নাব্য সংকটের কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় সবাইকে।
লক্ষ্মীপুরগামী লঞ্চ যাত্রীরা জানান, ডুবোচরের কারণে আমাদের আসা যাওয়া করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হতো। ৩ ঘণ্টার সময় এখন নৌপথ পার হতে লাগে ৫ ঘণ্টা বা তারও বেশি। কৃষানি ফেরির মাষ্টার আতিকুর রহমান বলেন, নদীতে অসংখ্য ডুবোচর রয়েছে। এ কারণে ২৬ কিলোমিটারের পথ এখন ঘুরে যেতে হয় ৩৬ কিলোমিটার। ১০ কিলোমিটার বেশি ঘুরে যাওয়ার কারণে যেমন অতিরিক্ত সময় লাগছে, তেমনি অতিরিক্ত তেল খরচ হচ্ছে। এ রুটে ভাটার সময় পানি ৪ ফুটের বেশি থাকে না, তাই ফেরিগুলোকে বহুপথ ঘুরে যেতে হয়। ফলে দীর্ঘদিনের এমন দুর্ভোগ লাঘবে বিআইডব্লিউটি নাব্য বাড়াতে ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করেছে।
বিআইডব্লিউটিএ ভোলা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ভোলা থেকে লক্ষ্মীপুর-বরিশাল নৌ রুটটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ রুটের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে- ডুবোচর। ড্রেজিং করে এ সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ভোলার তেঁতুলিয়া নদীর ভেদুরিয়া অংশে ড্রেজিং কাজ শুরু করা হয়েছে। অন্যান্য ডুবোচর নিঃস্বরণ করতেও ড্রেজিং শুরু হবে, তখন আর এ সমস্যা থাকবে না।
বিআইডব্লিউটিসির বরিশাল লাহারহাট অঞ্চলের ব্যবস্থাপক সিহাব উদ্দিন বলেন, এ রুট দিয়ে ২১ জেলার পরিবহন ও মানুষ যাতায়াত করে। বর্তমানে বরিশাল থেকে ৪টি এবং ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে ৫টি ফেরিচলাচল করলেও ডুবোচর না থাকলে ফেরির সংখ্যা আরও বাড়ানো যেত। এতে সরকারি রাজস্ব আয়ও বাড়বে। এ সংকট নিরসনে ড্রেজিং এর কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি এই সম্যসা আর থাকবে না।