ভালো নেই বাঁশ বেতশিল্পের কারিগররা
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর)
যশোরের কেশবপুর উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় প্লাস্টিক, মেলামাইন ও স্টিলের পণ্যের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশ ও বেতের তৈরি বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী। ফলে এ পেশার সঙ্গে জড়িত শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা আর্থিক অনটনের মধ্যে জীবন যাপন করে চলেছেন। এ পেশায় টিকতে না পারে ভিন্ন পেশায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন কারিগররা।
উপজেলার প্রতাপপুর, মজিদপুর, শ্রীরামপুর পাঁজিয়াসহ আরো কয়েকটি এলাকায় বংশ পরস্পরায় বাঁশ ও বেত শিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিল প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার। পুঁজি স্বল্পতা, বাঁশ ও বেতের উৎপাদন হ্রাস, আর্থিক অস্বচ্ছলতা, উপকরণের মূল্য বৃদ্ধিতে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহীবাঁশ ও বেত শিল্প একএ সময় ব্যাপক প্রচলন ছিল বাঁশের তৈরি কুলা, ঝুড়ি, চাটাই, হাঁস মুরগির খাঁচা, ঘাড়ো, বেতের চেয়ার, ধামা, চালুনি, চুলি, কলাই, বুরং, হাতপাখা ইত্যাদি।
কালের বিবর্তনের প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের প্রতাপপুর গ্রামের নিতাই দাস ও সুবল দাস জানান, এক সময় তাদের কাছে ১০ থেকে ১২ জন করে বাঁশ ও বেত শিল্পের কারিগর ছিল। তখনকার দিনে একজন কারিগরের বেতন ছিল প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। এখনকার দিনে সে কারিগরদের বেতন দিতে হয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। তাও সিজনের সময় পাওয়া যায় না।
তভরা আরো জানান, কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাঁশ ও বেতের তৈরি জিনিস পত্রের দাম বাড়ছে। আগে একটি বাঁশের দাম ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। সেখানে এখন প্রতিটি বাঁশ কিনতে হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩৬০ টাকায়। আর নির্বিচারে বন জঙ্গল উজাড় হওয়ার ফলে বেত গাছ এখন খুব একটা চোখে পড়ে না। তাই এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত পরিবারগুলো আর্থিক অনটনের মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করছেন। উপজেলার সাগরদাঁড়ি এলাকায় কার্তিক সরকার কয়েক বছর হল পৈত্রিক পেশা ছেড়ে দিয়ে এখন দিন মজুরি করছেন।
তিনি বলেন, বেত শিল্পে টাকা বিনিয়োগ করতে খুব একটা লাভ হতো না। এখন কৃষি খেতে কাজ করি, দিন বাদে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা রোজগার হয়। মজিদপুর গ্রামের গোবিন্দ দাস বলেন, বাবার পেশা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছি। কিন্তু বর্তমান যুগে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সহজ শর্তে তাদের জন্য ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করা হলে এই পেশার কারিগরদেরকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।