বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য সজীব তরফদারকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গত মঙ্গলবার দুপুরে ডেমা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে চাচা কামাল তরফদারকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাগেরহাট-রামপাল সড়ক দিয়ে বাগেরহাট শহর দিয়ে নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন। মির্জাপুর আমতলা মসজিদের সামনে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তার গতিরোধ করে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। এসময় গুলিতে মোটরসাইকেলে থাকা সজিবের চাচা কামাল তরফদার চোখে গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে নিহত সজিবের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। নিজ এলাকার কাশিমপুর স্কুল মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। পরিবার শোকাহত থাকায় বুধবারও মামলা হয়নি থানায়। নিহত সজীব তরফদার ডেমা গ্রামের মৃত সিদ্দিক তরফদারের ছেলে। সজিবের স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। সজীব তরফদার ডেমা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড থেকে ৩বার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। স্বজনদের অভিযোগ, স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যা, এর পেছনে যারা রয়েছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা। সজিবের বড় ভাই নাজমুল তরফদার বলেন, সজিব বাগেরহাট থেকে বাড়ি যাচ্ছিল। সাথে চাচা ছিল। খবর শুনে ঘটনাস্থলে এসে দেখি আমার ভাইয়ের মাথায় ৪টি গুলি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাকে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকারীদের বিচার চাই। বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালাম বলেন, সজিব একজন জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। সেকারণেও তার প্রতিপক্ষরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে। এটা পরিকল্পিত হত্যা দাবি করে অপরাধী ও পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান এই নেতা। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার তৌহিদুল আরিফ বলেন, ঘটনাস্থলে পাওয়া বুলেটের খোসা থেকে বোঝা যায় এটা শটগানের গুলি। ধারণা করছি শটগান দিয়ে গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা নিশ্চিত করতে একাধিক দল ছিল, হত্যাকারীরা মুখোশ পরা ছিল। হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে পুলিশের একাধিক গোয়েন্দা দল মাঠে কাজ শুরু করেছে। খুব দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি। ডেমা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক সজিব তরফদার নিহত হবার প্রতিবাদ জানিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালাম। ওই সমাবেশ থেকে বুধবার গণমিছিল ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বুধবার দুপুরে খুনিদের গ্রেফতারের দাবীতে শহরে গন মিছিল ও মিছিল শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রঙ্গনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জেলা বিএনপি। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালাম, জেলা বিএনপির সদস্য সচীব মোজাফফর রহমান আলম, বিএনপি নেতা, মো. মুজিবর রহমান, শেখ সাহেদ আলী রবি, সৈয়দ নাসির আহম্মেদ মালেক, খাদেম নিয়ামূল নাসির আলাপ। বক্তারা অবিলম্বে খুনিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। এছাড়া শোকার্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম ও সাবেক সভাপতি এমএ সালাম ও জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রেজাউল করিম।
