শিশিরভেজা প্রভাত শীতের আগমন বার্তা জানান দিচ্ছে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে। একইসঙ্গে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি নিচ্ছেন গাছিরা। শ্যামনগরের ১২টি ইউনিয়নের গাছিরা ইতোমধ্যে খেজুরগাছ চাছার (মাথা পরিষ্কার) কাজ শুরু করেছে। অল্পদিনের মধ্যে রস বের করে গ্রামের ঘরে ঘরে শুরু হবে গুড় পাটালি তৈরির উৎসব। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গাছিরা গাছ পরিষ্কার বা তোলা চাছার উপকরণ গাছি-দা, দড়ি তৈরিসহ ভাড় (মাটির ঠিলে) কিনছেন। কাশিমাড়ী গ্রামের কৃষক আহসান সিয়াম, চন্ডীপুর গ্রামের জয় মন্ডল, যাদবপুর গ্রামের শাওন বলেন, প্রতিবছর শীতের শুরুতে খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য আমরা প্রস্ততি নিচ্ছি। তারা বলেন, তাদের প্রত্যেকের ২৫-৩০টি করে খেজুর গাছ রয়েছে। এসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য প্রাথমিকভাবে চাছা-ছোলার কাজ করছি। কয়েকদিন আগে থেকে কাজ শুরু করি কিন্ত বৃষ্টির জন্য কাজে বাধাগ্রস্থ হই তাই কয়েকদিন দেরি করে আবার কাজ শুরু করেছি তাতে আশা করছি আর ১০/১২ দিন পর থেকে নতুন গুড় পাব। শ্যামনগর উপজেলা কৃষি অফিসার নাজমুল হুদা বলেন, গ্রাম এলাকায় কৃষকরা খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কারে ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রতি বছরের মতো এবার ও শীতের শুরুতে গাছ চাছা-ছোলাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে গাছিরা। পরে ভাড় বসিয়ে রস সংগ্রহ করবে কৃষক। তিনি আরও বলেন গত বছর জরিপ করেছিলাম খেজুরগাছ নিয়ে তখন দেখা গেছে শ্যামনগরে ৩০-৩৫ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। এছাড়া উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের উদ্যোগে প্রতিবছরই খেজুর গাছের চারা ও বীজ রোপণ করা হচ্ছে এবং স্থানীয় কৃষকদেরকে খেজুরগাছের চারা রোপণে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তবে এসব গাছ ধরে রাখতে হলে ইটভাটায় খেজুরগাছ পোড়ানো বন্ধ করতে হবে। কয়েকজন চাষি জানিয়েছেন, খেজুর গাছ অন্যান্য গাছের মত বপন করা বা সার কীটনাশক দিতে হয় না। প্রাকৃতিক নিয়মে পড়ে থাকা খেজুরের আঠি (বিচি) থেকে চারা জন্মায়। তবে সম্প্রতি খেজুর গুড়ের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে নতুন করে খেজুর গাছ রোপণের আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. সনজীব কুমার দাস বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে উপজেলার গাছিদের নিয়ে একটি সমাবেশ করে আনুষ্ঠানিকভাবে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতিমূলক কাজের উদ্বোধন করা হবে।