দেশের মাটিতে সৌদি ফল কুষ্টিয়ায় সাম্মাম চাষে সফলতা

প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এএইচএম আরিফ, কুষ্টিয়া

পুষ্টিগুণে ভরপুর সৌদি ফল সাম্মাম চাষ করে সফল হয়েছেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কচুবাড়ীয়া গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাইম ইসলাম খোকন। বেকারত্বের এ যুগে খোকন বাড়িতে বসে না থেকে আধুনিক কৃষিকাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে সে। প্রবাসী বড় ভাইয়ের পরামর্শে সৌদি ফল সাম্মাম চাষ করার উদ্যোগ গ্রহণ করে সে। পরে ইন্টারনেট ও কৃষি অফিসের পরামর্শে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেছেন তিনি। প্রথমবার চাষেই বেশ সাফল্য পেয়েছেন তিনি। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কচুবাড়ীয়া গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা নাইম প্রথম ৩৩ শতক জমি বর্গা নিয়ে এ চাষ করেছেন। পুষ্টিগুণে ভরপর বিদেশী এই ফল চাষাবাদ দেশে তেমন একটা প্রচলিত না। চাষে ঝুকি এবং চাষাবাদ সম্পর্কে প্রচারণার অভাবে চাষ কম হয়। নতুন জাতের রসালো ফল উৎপাদনের খবরে প্রতিদিন তার ক্ষেত দেখতে আসছেন আশপাশের কৃষকরা। কেউ কেউ আগামীতে নতুন জাতের এই রসালো ফল উৎপাদনের জন্য পরামর্শও দিচ্ছে খোকন। শুক্রবার সরেজমিন খেতে গিয়ে দেখা যায় কুমড়ো গাছের মতো লতানো গাছ। গাছের ফাঁকে ঝুঁলছে দেশি বাঙ্গীর মতো ফল। প্রায় প্রতিটি গাছেই ভরপুর ফল। বাঁশের বাতা আর পলিথিনের জালের ফাঁকে ফাঁকে পুরো ক্ষেত যেনো ফলে ভরে রয়েছে। এই ক্ষেতে পরিচর্যা করতে দেখা যায় নাইম ইসলাম খোকনকে। খোকন জানায়, বিদেশ থেকে ভাই ফোন দিয়ে এই সাম্মাম চাষ করা সম্পর্কে বলে। আমি ইউটিউব থেকে এটি কীভাবে চাষ করে সেটা জানলাম। পরে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ নিয়ে বগুড়ার একটি খামার থেকে এ ফলের চারা সংগ্রহ করি। সেই সাথে সেখানে গিয়ে চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।

চাষ সম্পর্কে তিনি বলেন, দোঁআশ মাটিতে সাম্মাম চাষ করা ভালো। মাটি ভালোভাবে চাষ করে বেড এবং নালা করে, মালচিং দিয়ে এ ফলের চাষ করতে হয়। তাহলে বেশ ভালো ফলন পাওয়া যায়। এটি খুবই অল্প সময়ের ফসল। গাছ লাগানোর দেড় মাসের মধ্যেই হয় সাম্মাম ফল। খোকন বলেন, আমি প্রথমে ভাই এর কথা মতো ঝুঁকি নিয়ে এ ফলের চাষ শুরু করেছি। এক বিঘা জমিতে আমার ৩ হাজার সাম্মাম গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছে ২-৩টি করে ফল রয়েছে। বেশি ফল রাখলে ফলন কম হয়। একেকটি ফলের ওজন হয় দেড় থেকে দুই কেজি। প্রতিটি গাছেই ফল বেশ ভালো এসেছে। এক বিঘা জমিতে আমার খরচ হয়েছে প্রথমবার হওয়ায় ১ লাখ টাকার মতো। আগামীতে খরচ কম হবে। আশা করছি এবছর দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার মতো লাভ হতে পারে। বিদেশি এ ফল অধিক লাভজনক উল্লেখ করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেন জানান, আধুনিক কৃষি গতানুগতিক কৃষিকাজের চেয়ে লাভজন। সাম্মাম বিদেশী ফল তবে আমাদের এখানেও চাষ করা সম্ভব। নাইম নামের তরুণ কৃষককে আমরা চাষে পরামর্শ দিয়ে সার্বক্ষণিক সহায়তা করছি। সে বিষমুক্ত আধুনিক উপায়ে চাষ করে বেশ সাফল্য পেয়েছে। আগামীতে এ চাষ বৃদ্ধি পাবে বলেও আশা করেন তিনি।