একসময় শুধু ইরি-বোরো ও আমন চাষের পাশাপাশি প্রচলিত কিছু শাক-সবজি চাষের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল বগুড়ার কৃষিকাজে। কিন্তু এখন আধুনিক পদ্ধতিতে নানা জাতের লালশাক আবাদ করছেন কৃষকরা। অল্প সময়ে স্বল্প পুঁজিতে অধিক লাভ করা যায় বলে কৃষকরা লালশাক চাষে ঝুঁকছে। শীতকালীন শাক-সবজির ব্যাপক পরিমাণে আবাদ হয়েছে। বাজারেও মৌসুমী সবজির রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। শীতকালীন সবজির মধ্যে লালশাক চাষ করে প্রত্যেকেই তাদের খরচ পুষিয়ে দ্বিগুণেরও বেশি লাভবান হচ্ছে। লালশাক চাষে ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন বুনছে বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার চোপিনগর মধ্যপাড়া এলাকার মাসুদ। এবার তিনি হাইব্রিড জাতের লালশাক চাষ করেছে। সারাবছর একই জমিতে চার থেকে পাঁচবার লাল শাকের বীজ বপন করে। দেখা গেছে অন্যান্য ফসলের তুলনায় লাল শাক চাষে অধিক মুনাফা পেয়ে থাকে। অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ লালশাক চাষে। মাসুদের দেখাদেখি এলাকার অধিকাংশ কৃষকই লালশাক চাষে ঝুঁকছেন। এতে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় অনেকেরই ভাগ্যের পরিবর্তন আসছে। অভাব অনটনের রেশ কাটিয়ে সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। বাজারে লালশাকের চাহিদা থাকায় দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। লালশাক চাষের ধারাবাহিকতা রাখা সম্ভব হলে বদলে যাবে এ এলাকার গ্রামীণ অর্থনীতির চিত্র। অনেকে পতিত জমিতেও লালশাকের আবাদ শুরু করেছে। কৃষক লিটন জানান, এখন সারা মাস লালশাক চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। কারণ লাল শাক চাষাবাদে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক কম। এখানে যেমন আমাদের লাভ হয় আবার প্রতি মাসে মাসে ফলনও পাওয়া যায়। উপজেলার চোপিনগর, আমরুল, আড়িয়া, খরনা ইউনিয়নের কৃষক ভালো লাভের আশায় লালশাক চাষে ঝুঁকছে। শাজাহানপুর উপজেলা কৃষি খাতে নীরব বিপ্লব ঘটেছে। এক সময় কৃষকরা শুধু ধান চাষ করতেন। এখন অনেকেই আধুনিক পদ্ধতিতে নানা জাতের লালশাক উৎপাদন করছে। লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে লালশাক চাষ। এ উপজেলার জমি সবজি চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এখানকার চাষিরা লালশাকসহ বিভিন্ন বিষমুক্ত সবজি চাষের ব্যাপারে বেশ অভিজ্ঞ। এ কারণে এলাকার চাষিরা উন্নত কৃষি প্রযুক্তির আওতায় সবজি চাষ করে গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত করছে। স্বল্প জমিতে অল্প খরচে লালশাকের চাষ করে কৃষকরা।