খেজুরগাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  হাফিজুর রহমান শিমুল, কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা)

কার্তিকের মাঝামাঝি এসে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ঘনকুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। ভোর থেকে ঘনকুয়াশার চাঁদরে ঢাকা পড়েছে পথ-ঘাট, এদিকে শীত মৌসুম আসতে এখনও বেশ কিছুদিন বাকি। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। রাতে ঠান্ডা-হিমেল বায়ু আর সকালের শিশির ভেজা ঘাস-পাতাই জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিকারী গাছিদের পরিবারে চলছে মহা ব্যস্ততা। কালিগঞ্জের গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক মধু বৃক্ষ খেজুর গাছ। শীত এগিয়ে আসছে। অবহেলায় বেড়ে উঠা খেজুর গাছের কদরও বেড়েছে। খেজুর গাছ পরিচর্যা পরিষ্কারসহ রস সংগ্রহের উপযোগী করতে প্রতিদিন ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। অনেকেই আবার মৌসুম চুক্তিতে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে শুরু করেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাছিরা কোমরে মোটা রশি বেঁধে খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাড়ির আঙিনায় বা রাস্তার ধারে রয়েছে সারিসারি খেজুর গাছ। ভোরের সূর্য ওঠার আগেই গাছ থেকে রসের হাঁফঢ়-ভাড় নামিয়ে বাড়িতে নিয়ে আশে গাছিরা। তবে অগ্রহায়ণ মাসে পুরোদমে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ শুরু হবে এবং তিন থেকে চার মাসব্যাপী খেজুরের রস দিয়ে গুড় তৈরি হবে বলে জানান গাছিরা। খেজুরের রস দিয়ে গুড় তৈরি করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে সংসারের খরচ মিটানোর পাশাপাশি অনেকে আবার বানিজিক ভাবে গুড় তৈরি ও করে বাজারে বিক্রি করবে বলে জানা যায়। এ উপজেলা এলাকার ১২টি ইউনিয়নের ১০৮টি ওয়ার্ডেই কমবেশি খেজুর গাছ লক্ষ্য করা যায়। নব্বই দশকের পর থেকে এই জনপদে মৎস্যঘের বেড়ে যাওয়ায় এবং লোনা হাওয়ার কারণে কমতে থাকে খেজুর গাছের সংখ্যা। বর্তমানে ঠুঙি, দোড়া আর হাতে ধারালো দা নিয়ে গাছিদের আর তেমন দেখা যায় না বলেই গৃহস্থালিদের খেজুর গাছ থাকলেও গাছি যথাযথভাবে না মেলায় তারা মনোবল হারায়ে ফেলেছে। এলাকাভিত্তিক দুই একজন গাছি পাওয়া গেলেও অধিক মজুরি দিয়ে স্বাধের রস সংগ্রহ করতে হয়। সবমিলে সুজলা-সুফলা গ্রাম বাংলার এই উপজেলার গাছিদের ব্যস্ততা নজর কেড়েছে।