সাবেক এমপি টগরসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় পুলিশের কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বিল্লাল হোসেনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগর টগর ও সাবেক পুলিশ সুপার আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। গত সোমবার দুপুরে বিল্লাল হোসেনের বোন শালপোনা পারভীন বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। দর্শনা আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রিপন আলী বাদীর বক্তব্য গ্রহণ শেষে মামলাটি আমলে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সিআইডি-কে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- দর্শনা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর জয়নুল আবেদিন নফর, তৎকালীন দর্শনা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান মিজান, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী মনসুর বাবু, দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা আলীহিম, দামুড়হুদা থানার সাবেক ওসি আহসান হাবিব, কনস্টেবল সাজিদুর রহমান ও এএসআই দেবাশীষ। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৩ সালে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকার দক্ষিণ চাঁদপুরের গ্রামের বিল্লাল হোসেনের কাছে দলীয় দাপটে দেখিয়ে চুয়াডাঙ্গা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর, আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল আবেদীন নফর, আলী মনসুর বাবু ও আলীহিম পুলিশের ক্রসফায়ারে ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবি করে। বিল্লাল হোসেন চাঁদা দিতে রাজি না হয়ে দর্শনা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশের ইনচার্জ এস এম মিজানকে জানায়। এ সময় দর্শনা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসএম মিজানুর রহমান মিজান সাবেক এমপি আলী আজগর টগর, তার ভাই আলী মনসুর বাবু, আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল আবেদিন নফর ও আলীহিমকে জানালে পুলিশ এসআই মিজান, সাবেক চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল রহিম শাহ চৌধুরী, দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবীব, কনস্টেবল সাজিদুর রহমান, এএসআই দেবাশীষ একত্রিত হয়ে বিল্লাল হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরপর গত ১১ আগস্ট ২০১৩ রাতে অবৈধভাবে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে ওইদিন দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুর বিল্লাল হোসেনকে বাড়ি থেকে অপহরণ করে দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুর উজলপুর রাস্তার হরচরার মাঠে নামক স্থান নিয়ে যায়। এ সময় আসামিরা বিল্লালকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও একাধিক গুলি করি হত্যা করে। পরে পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে বিল্লাল হোসেনের নিহতের নাটক সাজায় তারা। সকালে সাক্ষীগণসহ স্থানীয়রা ঘটনাস্থলেদে গিয়ে দেখতে পায় বিল্লাল হোসেনের বাম বুকে, বাম বগলের নিচে, ডান উরুসহ একাধিক স্থানে গুলির চিহ্ন রয়েছে। পিঠে দুই হাটুর নিচে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা দেখা যায় এবং বিল্লালের দুই হাতে হ্যান্ডকাপ দিয়ে বাধা ছিল। তার ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির নখ উপড়ানো হয়। পরের দিন এই খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ ঘটনায় আদালতের আইনের আশ্রয় নেয়ার কথা শুনলে আসামিরা আমার (নিহত বিল্লালের বোন শালপোনা পারভিন) পরিবারকে অপহরণ গুম খুনের হুমকি দেয়। এজন্য তিনি এতদিনে মামলাটি দায়ের করতে পারেননি। মামলার আইনজীবী চুয়াডাঙ্গা জজ কোর্টের অ্যাড. মাসুদ পারভেজ রাসেল বলেন, বিজ্ঞআদালত বাদীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি তদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সিআইডি পুলিশের নিকট প্রেরণ করেছে।