ঢাকা ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভবন ও ডাক্তার সংকটে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত

ভবন ও ডাক্তার সংকটে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত

পিরোজপুরের কাউখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন ও ডাক্তার সংকটে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। জনবল সংকটে সেবাবঞ্চিত হচ্ছে লাখো মানুষ। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, এই উপজেলায় ১৪ জন চিকিৎসকের স্থানে আছে ০৩ জন, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারীর ৫৯টি পদে আছে ২৮ জন ৩১ জনের পদশূন্য। ভবন সংকটের কারণে একই রুমে ডায়রিয়া, ডেঙ্গুসহ জেনারেল রোগীর চিকিৎসা দেয়া হয়। জরুরিসেবা বিভাগ পরিত্যক্ত ডাক্তার কোয়াটার ভবনে ঝুঁকি নিয়েই চলছে। এছাড়া কাউখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১৭ বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। পরে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যার উন্নিত করার জন্য ভবন নির্মাণকাজ ২০০৮ সালে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর শুরু করেছিল।

১৬ বছর অতিবাহিত হলেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারে নাই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো। যে কারণে দুই দফায় কার্যাদেশ বাতিল করে নির্মাণকাজ বন্ধ ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, প্রথম দফায় কার্যাদেশ বাতিলের পর গত ২৪ জুলাই ২০২২ তারিখ মেসার্স কহিনুর এন্টারপ্রাইজ দাদপুর লজ কাউনিয়া সদর, বরিশালের অনুকূলে এইচইডি কর্তৃপক্ষ কার্যাদেশ প্রদান করে এবং ২৩ জুন ২০২৩ নির্ধারণ কাজ শেষ করার আদেশ দেয়া হয়। অথচ ৩১ মে ২০২৩ কাজ পরিদর্শন করে তৎকালীন স্বাস্থ্য বিভাগের নিবার্হী প্রকৌশলী মো: জাকির হোসেন কাজের অগ্রগতি না হওয়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কার্যাদেশ বাতিলের সুপারিশ করেন। পরে কাজটি পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী।

তিনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ শেষ করার বিষয় কিছু নির্দেশনা প্রদান করেন। পরবর্তী সময়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তার নির্দেশনা না মানায় তৎকালীন স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সরোয়ার হোসাইন চৌধুরী কাজের কার্যাদেশ বাতিল ঘোষণা করেন। পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে অভিযোগ করলে আদাল প্রকৌশল অধিদপ্তরের আদেশ স্থগিত করে ডিসেম্বর ২০২৪ এর মধ্যে নির্মাণকাজ সমাপ্ত করার নির্দেশ দেন। অথচ উচ্চ আদালতের আদেশের পরেও ঠিকাদার কোনো কাজ শুরু করেনি। এমনকি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ভবন নির্মাণের জন্য কিছু পাইলঢালাই ব্যতীত কোনো কাজ ১৬ বছরে কোনো ঠিকাদার শুরুই করেননি।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নূর ই এন্টারপ্রাইজ কার্যাদশ পেয়ে ২ বছর পর আংশিক কাজ করে বাকি কাজ ফেলে পালিয়ে যায়। ২০১৪ সালে ২৫ জুন কর্তৃপক্ষ কার্যাদেশ বাতিল করেন। পুনরায় ২০২২ সালের ২৪ জুলাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কহিনুর এন্টারপ্রাইজ ৬তলা বিশিষ্ট মূল ভবন ১০ ইউনিটের অত্যাধুনিক ডরমেটরি ভবন, সেবিকা কোয়াটার, গ্যারেজ, স্টোরসহ প্রয়োজনীয় সকল ভবন নির্মাণের জন্য ২৫ কোটি ১১ লাখ টাকা বরাদ্দের কার্যাদেশ পেয়ে নির্মাণকাজ শুরু করলেও একইভাবে কাজটি ফেলে রেখেছেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বারবার চেষ্টা করলেও কথা বলা যায়নি।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুজন সাহা বলেন, ভবন ও ডাক্তার কর্মচারী সংকটে সঠিকভাবে স্বাস্থ্য সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বজল মোল্লা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত