বই পড়ায় উদ্বুদ্ধকরণে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি
ড. মো. মোমোয়াজ্জেম হোসেন ছাত্র জীবন থেকেই নিজে বই পড়েন এবং বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করেন মানুষকে। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি ৩০ হাজার বই মানুষকে দিয়েছেন পড়ার জন্য বিনা টাকায়। তা ছাড়া প্রতিনিয়ত মানুষকে বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করছেন, বিতরণ করে চলছেন বই। স্মার্ট ফোন ছেড়ে বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করেন তিনি। নিজের টাকা খরচ করে ২০০ জনকে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সদস্য বানিয়ে বিরল রেকর্ড সৃষ্টি করেন ড. মোয়াজ্জেম হোসেন। বর্তমানে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এমনই ব্যতিক্রমী কাজ করেন নরসিংদী প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. মোয়াজ্জেম হোসেন। নিজের পকেট থেকে টাকা খরচ করে অন্যকে বই পড়তে আগ্রহ সৃষ্টিকারী মোয়াজ্জেম হোসেন গত বুধবার নরসিংদী প্রেসিডেন্সি কলেজের ২০০ জন শিক্ষার্থীকে সদস্য করে দেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির। তিনি নরসিংদীতে বই পড়ার জন্য মানববন্ধন করেন।
তা ছাড়া দুটি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করে বই পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন তিনি। বই পড়া আন্দোলন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা। নরসিংদী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর গোলাম মোস্তাফা মিয়া বলেন, ডক্টর মোয়াজ্জেম হোসেনের উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয় এবং শিক্ষার্থীদের পড়ার একটি সুন্দর পরিবেশ করে দেয়ার জন্য তাকে ধন্যবাদ। শিক্ষার্থী আইয়ুব খান বলেন, স্যার সবসময় আমাদেরকে বিভিন্ন বই পড়ার কথা বলেন। মোয়াজ্জেম হোসেনের জন্ম নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার খৈনকুট গ্রামে। মামা আব্দুল গফুর ছিলেন বাঞ্ছারামপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ। তার উৎসাহে বইপড়া শুরু মোয়াজ্জেম হোসেনের। ১৯৮৫ সালের কথা যখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন তখনই পাঠ্য বইয়ের বাহিরে বই পড়া শুরু করেন। ১৯৯০ সাল থেকে বই সংগ্রহ করতে থাকেন। নরসিংদী স্টেশন, লাইব্রেরি ঘুরে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কাজী নজরুল ইসলাম, ডেল কার্নেগির বই কেনেন। গ্রামের পরিচিতজনদের কাছ থেকে বই এনে পড়ার টেবিলে সাজিয়ে রাখতেন। বন্ধুদের পড়তে দিতেন। পাঠচক্র করতেন। ২০০০ সালে নরসিংদী শহরে এসে ওঠেন। তারপর প্রতিষ্ঠা করেন নরসিংদী পাবলিক লাইব্রেরি। নিজ গ্রাম খৈনকুটে প্রতিষ্ঠা করেন শিক্ষানুরাগী সামসুউদ্দিন পাবলিক লাইব্রেরি ২০১০ সালে। নরসিংদী পাবলিক লাইব্রেরিতে বই আছে প্রায় ছয় হাজার। সবার জন্য উন্মুক্ত। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন খোলা থাকে। বাসায় বই নিতে চাইলে নাম এন্ট্রি করতে হয়। পাঠাগারের সংগ্রহও মন্দ নয়। গ্রামীণ পুথির পাণ্ডুলিপি আছে ৩০টি। ড. মোয়াজ্জেম হোসেন একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজচিন্তক ও লেখক।