স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে ভোগান্তি
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিয়া ইউনিয়ন পরিবার ও পরিকল্পনা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে দেখা যায় ময়লার ভাগাড়। স্থানীয় বড়চওনা হাটবাজারের ময়লা-আবর্জনাগুলো স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আশপাশে ফেলা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। যে কারণে দুর্গন্ধে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীসহ চিকিৎসক ও স্থানীয়দের। সরেজমিন দেখা যায়, বড়চওনা হাটের ব্যবসায়ীরা ঝুড়িভর্তি ময়লা-আবর্জনা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একেবারে কাছে রেখে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও ওই বাজারের হাটের দিনের ব্যবসায়ী ও বাজার পরিষ্কার করা উচ্ছিষ্ট ময়লাও টুকরি ভর্তি করে সেখানে ফেলছেন। যে কারণে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে জমেছে ময়লার স্তুপ। ময়লার স্তুপে পলিথিন ও ডাবের খোসায় পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। জমে থাকা পানিতে এডিশ মশার জন্ম হয়। সাধারণ রোগীরা বলছেন, রোগ সারাতে এসে সুস্থ মানুষও এখানে রোগী হয়ে যাওয়ার অবস্থা। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে ময়লা ফেলার কারণে এখান থেকে দুর্গন্ধ ও রোগজীবাণু ছড়াচ্ছে। দুর্গন্ধে পাশের রাস্তা দিয়েও চলাচল করা যায় না। ময়লা দ্রুত অপসারণ না করা হলে অবস্থা আরো খারাপ হবে। চিকিৎসা নিতে আসা রমেছা বেগম জানান, কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই এখানে ময়লার ভাগাড় সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনিটরিং করলে এমনটা হতো না। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশের ব্যবসায়ীরা জানান, ‘হাসপাতালের সামনে এমন ময়লার ভাগাড় চিন্তাই করা যায় না। ময়লার কারণে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে কেউ এক মিনিটও দাঁড়াতে পারেন না। এ ছাড়াও দুর্গন্ধের কারণে আমরা ব্যবসায়ীরাও ঠিকমতো ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছি না। স্থানীয়দের অভিযোগ, যেভাবে দিনকে দিন ময়লা ফেলা হচ্ছে তাতে ব্যাপক হারে মশার বংশ বিস্তারসহ ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের ফলে এখানে আগতদের মধ্যে ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন বায়ুবাহিত রোগবালাই ছড়ানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমনকি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরাও নতুন করে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ থাকায় দিনরাত স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দেয়াল ঘেঁষেই মূত্রত্যাগ করতে দেখা যায় পথচারীদের, যা আরো অতিরিক্ত দুর্গন্ধ তৈরি করে পরিবেশ দূষণের পরিমাণ বহুগুণে বৃদ্ধি করছে। এ অবস্থায় চরম দুর্ভোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনের আবর্জনার ভাগাড়। স্থানীয়রা জানান, কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে হাটবাজার এলাকা। অথচ তারাই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আশপাশ দূষিত করছেন। বড়চওনা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি নূরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুক, এখানে এসে মানুষ দুর্গন্ধমুক্তভাবে চিকিৎসা নিক আমিও চাই। তবে বিকল্প কোনো জায়গা না থাকায় বাজারের ময়লা ফেলা হচ্ছে। শিগগিরই এসব ময়লা অপসারণ করা হবে। বড়চওনা হাটের ইজারাদার আবুসাঈদ মিয়া বলেন, অন্যত্র ময়লা ফেলার জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশে ময়লাগুলো খুব দ্রুতই অপসারণ এবং পুড়িয়ে ফেলা হবে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আশিকুর রহমান বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সীমানা প্রাচীর না থাকায় যেনো তেনোভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশেই লোকজন ময়লা ফেলে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে সিএনজি, ইজিবাইক-অটোবাইক আড়াআড়িভাবে রাখায় এখানে চলাচলেও দারুণ ব্যাঘাত ঘটে। ময়লা থেকে চরমভাবে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। মশামাছির উপদ্রব এখানে বেশি, চিকিৎসাসেবা দেয়াই কঠিন হয়ে পড়েছে। যতক্ষণ সেবা দিচ্ছি খুব কষ্ট হচ্ছে, দুর্গন্ধে টেকাই দায়। সখীপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাশাহেদ হাসান বলেন, বিষয়টি জেলা ও উপজেলা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে থাকা জায়গাটি ময়লার স্তুপে পরিণত হওয়ায় আশপাশের পুরো এলাকাজুড়ে ব্যাপকভাবে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। যার ফলে ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীসহ জনসাধারণের।