নোয়াখালীতে যুবদল নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবদল নেতার নাম ইউনুস আলী ওরফে এরশাদ (৪০)। তিনি চরফকিরা ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন এবং একই ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন। এরশাদ উপজেলার দিয়ারাবালুয়া গুচ্ছ গ্রামের রইছুল হকের ছেলে। তিনি পেশায় একজন নৌকার মাঝি এবং তিন সন্তানের ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম নেয়ার পথে ফেনীতে তার মৃত্যু হয়। এর আগে, একই দিন বেলা সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গুচ্ছ গ্রাম ঘাটে এই ঘটনা ঘটে। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে।

নিহতের ভগ্নিপতি মো. জয়নাল আবেদীন আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, গত ৬-৭ মাস আগে মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী (পলাতক) আমার থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে মুছাপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মুছাপুর ক্লোজারের পশ্চিমের দা খালটি ইজারা দেয়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর খালটি দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠে স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতা। গত বুধবার মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহজাহান ও বিএনপি নেতা বাবরের নির্দেশে স্থানীয় সমীর খাঁন, জাবেদ, ওবায়দুল্যাহ খানসহ ১০-১৫ জন দায়ের খালে আমাদের মাছ ধরার জালটি কেটে তাদের জাল বসিয়ে দেয়। খাল দখলকারীরা বলে আওয়ামী সরকার এখন নেই তাদের সময়ের দেয়া ইজারা বাতিল। এই বলে তারা খালটি দখলে নেয়। ভগ্নিপতি জয়নাল আবেদীন আলমগীর অভিযোগ করে আরো বলেন, গত বৃহস্পতিবার সকালে আমিসহ আমাদের পরিবারের আরো চারজন সদস্য আমাদের জাল কেটে খাল দখল করে মাছ ধরার বিষয়টি জিজ্ঞাসা করতে চরফকিরা ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রাম ঘাটে যাই। সেখানে স্থানীয় নেজাম (৪২) তার ছেলে সুজন (২৫) ও তারেক (২৬) এবং তাদের আত্মীয় তারেক (২৬) বাবলু (২৭) রুমনের (২৫) সাথে আমাদের বাগবিতণ্ডা বেধে যায়। একপর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে নিজাম ডাকাত ও তার লোকজন ইউনুছ আলী এরশাদকে তলপেটে ছুরিকাঘাত করলে তার নাড়িভুড়ি বের হয়ে যায়।

এ ছাড়া আরো চারজনকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। পরে গুরুতর আহত এরশাদকে প্রথমে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম নেয়ার পথে ফেনীতে তার মৃত্যু হয়। চরফকিরা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গোলাম রব্বানী বিপ্লব বলেন, গত বৃহস্পতিবার গুচ্ছ গ্রামের ঘাট এলাকায় একটি ভিটিতে মাটি ফেলাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটে। এর সঙ্গে মুছাপুরের খাল দখলের বিষয়টিও জড়িত রয়েছে। মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. শাহজাহান অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে আমিও আমার ছোট ভাই বাবর কোনো ভাবেই জড়িত নয়। এটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। কোন নেতা ষড়যন্ত্র করে আমাদের নাম বলাচ্ছে। ওসি গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।