অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন থামছে না
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দৌলতদিয়া ও উজানচর ইউনিয়নের মরা পদ্মা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন থামছেই না। প্রশাসন থেকে অভিযান ও মামলা দায়ের এবং এলাকাবাসীর মানববন্ধন কর্মসূচিতেও বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলন। এদিকে অবাধে বালু উত্তোলননে নদীতীরবর্তী বিভিন্ন স্থাপনা, বসত বাড়ি ও ফসলি জমিতে দেখা দিয়েছে ভাঙন আতঙ্ক। সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ও উজানচর ইউনিয়নের মরা পদ্মা নদীর বিভিন্ন অংশে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে সকাল-সন্ধ্যা অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এসব বালু পাইপের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন পয়েন্টে। স্থানীয়রা ভাঙন আতঙ্কে থাকলেও প্রভাবশালী মাটি খেঁকোদের বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন তারা। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, আগে একটি পক্ষের প্রভাবশালীরা আমাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করলেও এখন কয়েকটি পক্ষ একত্রিত হয়ে আমাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে। যে কারণে চোখের সামনে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলনের ফলে আমাদের ফসলি জমি ও বসতভিটা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় দিনাতিপাত করছি। মাঝে মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন অভিযান চালালেও কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় বালু উত্তোলন চলে পূর্বের ন্যায়। তবে স্থানীয় প্রশাসনের অভিযানের প্রভাব পরে আমাদের ওপর।
স্থানীয় জমির মালিক ফকির সাইফুজ্জামান সান্টুসহ অনেকেই জানান, আমাদের জমিতে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। অথচ আমরা কিছু বলতে গেলে তারা স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নেয়া আছে বলে আমাদেরকে ভয়ভীতি দেখায়। এ মাটি উত্তোলনের কারণে এলাকার বিভিন্ন স্থাপনা, বসত বাড়িসহ ফসলি জমি ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে। এ নিয়ে মাঝে মধ্যেই মানববন্ধন পর্যন্ত হয়েছে। এরফলে কয়েকদিন বন্ধ থাকলেও তা আবার চালু হয় পুরোদমে। জমির মালিক আমরা হলেও আমরাই অসহায় অবস্থায় রয়েছি। স্থানীয় বাসিন্দা ও জমির মালিকদের দাবি নদী ও ফসলি জমির ক্ষয় রোধ এবং স্থানীয়দের জীবনমান সুরক্ষার জন্য অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো প্রয়োজন।
প্রশাসনের কার্যক্রম আরো জোরদার করলে এ ধরনের অপরাধ বন্ধ করা সম্ভব হবে। অভিযুক্তরা জানান, তারা জমির মালিকদের অর্থ প্রদান করে বালি উত্তোলন করছেন, তবে প্রশাসনিক অনুমতি নেননি তারা। গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, নদী বা পুকুর থেকে বালি উত্তোলন বেআইনি। আমরা এর আগে অভিযান চালিয়ে ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করেছি। কেউ আবার বালি উত্তোলনের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইউএনও আরো জানান, গোয়ালন্দ উপজেলায় অবৈধ ড্রেজিং কার্যক্রমে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করা হবে।