লতিকচু চাষে কম খরচে বহুমুখী লাভ

প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  তাজুল ইসলাম, তিতাস (কুমিল্লা)

কুমিল্লার তিতাসে লতিকচুর চাষ ও চারা উৎপাদনে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। কচুর চারা উৎপাদন এবং লতি ও কাণ্ড বিক্রি করে অনেকে লাভবান হচ্ছেন। কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কন্দাল ফসলের পুষ্টিগুণ ও উচ্চমূল্য বিবেচনায় লতিকচু, পানিকচু ও মুখীকচু চাষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। উপজেলায় ২০১৯ সাল হতে লতিকচু, পানিকচুসহ গোল আলু ও মিষ্টি আলুর প্রদর্শনী দিয়ে দিয়ে আসছে। এর আগে লতিকচু চাষে কৃষকের তেমন আগ্রহ ছিল না। অল্প পুঁজিতে অধিক লাভবান হওয়ায় পর্যায়ক্রমে কৃষক কচু চাষের প্রতি আগ্রহ হচ্ছেন। বিভিন্ন জাতের কচুর জাত থাকলেও এলাকায় লতিরাজ জাতের কচু ভালো উৎপাদন হয়। লতিকচু ও পানিকচুর প্রদর্শনী, মাঠদিবস ও কৃষক প্রশিক্ষণ বরাদ্দ আসলে আগ্রহী কৃষকদের আধুনিক মাল্টিমিডিয়ায় ভিডিও এবং পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের নাগেরচর গ্রামের প্রবাস ফেরত মো. ফারুক মিয়ার জানান, কচু চাষে আগ্রহী হওয়ায় এবার কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলা কৃষি অফিস ২০ শতক জমিতে লতিকচুর প্রদর্শনী দেয়। প্রকল্প থেকে ৩ হাজার চারা, প্রয়োজনীয় সার ও কীটনাশকও সরবরাহ করে। পরে আমি আরো ৩০ শতক জমিতে লতিকচু ও পানিকচু আবাদ করি। চারা রোপনের ২ মাস পর থেকে লতি বিক্রি শুরু করি। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার টাকার লতি এবং ১০ হাজার টাকার কচু বিক্রি করেছি। আশা করি সর্বশেষ পর্যন্ত লাখ টাকা মুনাফা অর্জন করতে পারব। একই গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, আমি এবার ১৬ শতক জমিনে লতিকচু চাষ করেছি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা ও পরামর্শ পাওয়ায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার টাকা বিক্রি এসেছে। আমার দেখাদেখি গ্রামের অনেকেই এবার কচু চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছে। কালাইগোবিন্দপুর ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাউছার আহমেদ বলেন, কচু একটি অধিক লাভজনক ফসল। এর পাতা, কাণ্ড, লতির রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। এটি দেশের চাহিদার পূরণের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি করা যায়। আমার ব্লকে গত ৩-৪ বছর ধরে একাধিক কৃষক কচু চাষ করে আসছে। অল্প পুঁজিতে অধিক লাভ হওয়ায় এ চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফ আব্দুল্লাহ মোস্তাফিন বলেন, এলাকার কৃষকদের মধ্যে কচু চাষে আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলার নাগেরচর গ্রামের. ফারুক মিয়া ও আব্দুর রহমানের কচু চাষে সফলতা পাওয়ায় ওই গ্রামের প্রায় ১০ জন কৃষক এ কচুচাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কচু একটি লাভজনক ফসল। এ ফসল উৎপাদনে কৃষি অফিস থেকে সর্বত্র সহযোগিতা করা হচ্ছে।