দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে নাব্য সংকট

প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রাজবাড়ী প্রতিনিধি

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে তীব্র নাব্য সংকটের কারণে ফেরি চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পদ্মার পানির স্তর নেমে যাওয়ার ফলে দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর এবং পাটুরিয়ার ৩ নম্বর ফেরি ঘাটে গত এক মাস ধরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে দৌলতদিয়ার সাতটি ঘাটের মধ্যে মাত্র দুটি ঘাট পুরোপুরি সচল রয়েছে। বাকি পাঁচটি ঘাটের মধ্যে বেশ কয়েকটি বহুদিন ধরে ভাঙনের কারণে বন্ধ। অন্যদিকে নাব্য সংকটের কারণে দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরি ঘাটের পাশে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িগামী তিনটি পণ্যবাহী জাহাজ আটকা পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ঘাট, যা বড় ফেরিগুলোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, বর্তমানে ড্রেজিং কাজ চলায় প্রায় অচল। পানির স্তর কমে যাওয়ায় ফেরিগুলোর জন্য পদ্মায় চ্যানেল সরু হয়ে গেছে। ফেরি চালকেরা জানিয়েছেন, চর জেগে ওঠার কারণে প্রায় দুই কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে, যা সময় এবং জ্বালানি খরচ দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীনের মাস্টার মাসুদ আকন্দ বলেছেন, নাব্য সংকটের পাশাপাশি পদ্মায় মার্কিন বাতি (নৌপথের দিকনির্দেশক আলো) না থাকায় রাতে ফেরি চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে। তিনি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন, বিশেষ করে শীতের কুয়াশার মৌসুমে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। ঢাকাগামী যাত্রী খলিলুর রহমান বলেছেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে সারা বছরই ভোগান্তি পোহাতে হয়। তিনি দ্রুত দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আয়মানের মাস্টার বলেন, জাহাজ চলাচলে প্রয়োজন ১২-১৫ ড্রাফট পানি, কিন্তু বর্তমানে পানির স্তর রয়েছে মাত্র ৮-১০ ড্রাফট। ফলে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করতে ছোট জাহাজ ভাড়া করতে হচ্ছে, যা পরিবহন খরচ বৃদ্ধি করছে। বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন জানিয়েছেন, নাব্য সংকটের কারণে ৭ নম্বর ঘাটে ফেরি চলাচল সীমিত রাখা হয়েছে।

ঘাটে খনন কাজ অব্যাহত আছে এবং বিআইডব্লিউটিএ’র প্রকৌশলীরা কাজ করছেন। নৌপথে মার্কিন বাতি স্থাপনের জন্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বর্তমানে এই নৌরুটে ১৬টি ফেরি সক্রিয় রয়েছে। তবে নাব্য সংকট কাটাতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পুরো নৌরুটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।