রংপুরের পীরগঞ্জে শীতকালীন সবজি মুলার কদর বেড়েছে। এবারেও পীরগঞ্জের হাট বাজার গুলোতে ব্যাপক মুলার আমদাদি ঘটছে। বিগত বছরে ফলন বেশি হলেই দুরঅবস্থা হতো মুলার। অনেক সময় দাম না পেয়ে রাস্তাঘাটেই মুলা ফেলে দিয়েছে কৃষক।
আবার জমিতেই পচে সার হয়েছে। কিন্তু এ বছর হাটবাজারে প্রচুর চাহিদা এই মুলার। বর্তমানে চাষিদের পকেট গরম করছে এই সবজি। মুলার চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরও লাভে আছেন চাষিরা। রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদীর বালু চর ঘুরে কথা হয় মুলা চাষিদের সঙ্গে। তার বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর মুলার আবাদ কম হয়েছে। গত বছর দাম না পেয়ে মুলা নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে।
ফলে এ বছর অনেকেই এই সবজির চাষ করেননি। ৬ থেকে ৮ টাকা মুলা এক কেজি হয়। এ বছর শুরুতেই ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে ৪০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জমি থেকে তুলে নিচ্ছেন ১ হাজার টাকা মণ দরে। এই সবজি এবার অতীতের জ্বালা যন্ত্রণা ভূলিয়ে চাষিদের পকেট গরম করে দিচ্ছে। মুলা চাষি কুয়াতপুর হামিদপুর গ্রামের মর্তুজা মিয়া জানান, কেউ বুঝতে পারেনি এবার মুলার দাম বেশি হবে। গত বছরে মুলা গড়াগড়ি খেয়েছে। সেই কারণে এ বছর অনেকেই মুলা চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। করতোয়া নদীর বালুচরে প্রতিটি সবজির আবাদ ভালই হয়।
এ ছাড়াও এখানে মুলা সাথী ফসল হিসেবেও জমিতে চাষ করা হয়। মরিচ, টমেটো, আলু, মিষ্টিকুমড়াসহ অনেক সবজির সাথে এই মুলার চাষ করা হয়। এবার বালুচরে যে কৃষকেরা মুলার চাষ করছে সবাই লাভবান হয়েছে। একই এলাকার শামীম মিয়া জানান, নদীর তীরে মুলার চাষ করে অনেক সুবিধা। পাইকাররা প্রতিদিন নদীর তীরে মুলা কিনে নদীর পানিতেই পরিষ্কার করে ওজন দিয়ে নিয়ে যায়। মুলার পাইকারি ব্যবসায়ী হাফিজার রহমান জানান, হাটের চেয়ে এক দেড়শ টাকা কমেই এখানে কেনা যায় এবং পরিষ্কার করতে বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হয়না। এতে কৃষকের হয়রানিও কম হয়। আমি এখান থেকেই মুলা ঢাকায় নিয়ে যাই। পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, চলতি মওসুমে উপজেলায় প্রায় ৫৬ হেক্টর জমিতে মুলার চাষ করা হয়েছে। স্বল্পমেয়াদী ও সাথী ফসল হিসেবে কৃষক মুলার চাষ করে থাকে। আগাম জাতের মুলা চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।