রাজবাড়ীতে প্রকৃত কৃষকরা কৃষি প্রণোদনার আওতায় আসতে না পারায় বিতরণকৃত সার ও বীজ কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে। এতে একশ্রেণির সুবিধাভোগীরা লাভবান হলেও প্রকৃত কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন। কৃষকরা বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রবি মৌসুমে মোট ২১,৯০০ কৃষককে প্রণোদনার আওতায় আনা হয়েছে। এই প্রণোদনার মধ্যে গম, সরিষা, সূর্যমুখী, পেঁয়াজসহ অন্যান্য শীতকালীন ফসলের জন্য বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়। গত সোমবার গোয়ালন্দ উপজেলার জামতলা বাজারের একটি দোকান থেকে ২০ কেজি করে ৫৫ বস্তা গমের বীজ ও ৫০ কেজি ওজনের ২১ বস্তা ডিএমপি সার জব্দ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযুক্ত দোকান মালিকের ছেলে আমিনুল ইসলামকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করে বলেন- প্রকৃত কৃষকদের বাছাই না করে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে, ফলে বিতরণকৃত সার ও বীজ কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে। গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খোকন উজ্জামান জানান, এ বছর গমের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে, যা কালোবাজারে বিক্রি করা আইনত দণ্ডনীয়। বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, মাঠ পর্যায়ে কৃষক বাছাই করে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করা হবে এবং প্রয়োজনে অভিযান চালানো হবে। গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, সরকারি বিতরণের সার ও বীজ কালোবাজারে মজুদ রাখা বেআইনি। অভিযানের সময় উদ্ধার সামগ্রীর বাজার মূল্য প্রায় ৬০-৬৫ হাজার টাকা। এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চালানো হবে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. শহিদুল ইসলাম জানান, প্রণোদনার আওতায় ২১ হাজার কৃষক আনা হলেও বাস্তবে আরো অনেক বেশি কৃষক রয়েছে। যারা এইবার সুবিধা পায়নি, তারা পরবর্তীতে সুযোগ পাবে। কৃষি বিভাগ কালোবাজারি রোধে তৎপর রয়েছে। সরকারি প্রণোদনা সঠিক কৃষকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য আরো স্বচ্ছ ও কার্যকর প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।