চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার থামছে না

প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মসিউর রহমান জেহাদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে তা মানার গরজ নেই। ফলে অনিয়ন্ত্রিত এ ব্যাগ ব্যবহারের কারণে পরিবেশ হুমকির মধ্যে পড়েছে। জানা যায়, মাঠ পর্যায়ে পলিথিনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

দেশজুড়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে হাট-বাজার ও কারখানায় অভিযান চালানো হচ্ছে। এ সব বিষয় মনিটরিং করছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের গঠন করা পাঁচ সদস্যের কমিটি। এরআগে ২০০২ সালে সরকার আইন করে সাধারণ পলিথিনের উৎপাদন, বিপণন ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করলেও মাঠ পর্যায়ে আইনটির বাস্তবায়ন করা যায়নি।

অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের কারণে বিগত বছরে পলিথিনের ব্যাগ পরিবেশের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাল, নালা, নর্দমায় পলিথিনের স্তূূপের কারণে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।

জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ক্রেতা-বিক্রেতারা দেদারসে ব্যবহার করছে পলিথিন ব্যাগ। বিকল্প না থাকায় হঠাৎ করে নিয়ম মানতে আগ্রহী হচ্ছে না। বিভিন্ন বাজার ও শপিংমলগুলোতে এখনো পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে। পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারকারীরা জানায়- পলিথিনের পরিবর্তে পাট বা কাপড়ের ব্যাগ অথবা পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ব্যবহার করা যায়।

কিন্তু সেগুলো সব সময় সঙ্গে রাখা যায় না কিংবা কেনার অভ্যাস এখনো গড়ে ওঠেনি। পাটের না হলেও বিকল্প একধরনের ব্যাগ পাওয়া যায়। তবে তার দাম সাধারণ পলিথিনের তুলনায় কিছুটা বেশি। সংশ্লিষ্টরা জানান, শহর এলাকার বর্জ্য পদার্থের একটা বিরাট অংশ হচ্ছে পলিথিন বা প্লাস্টিক। উপাদানগত দিক থেকে পলিব্যাগ মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর পরিবেশ ও আবহাওয়ার জন্য ক্ষতিকর। পরিত্যক্ত প্লাস্টিক মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়ে বাতাস, পানি ও খাবারের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে।

এই অনুপ্রবেশের ফলে দীর্ঘমেয়াদে ফুসফুস ও কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত হয়। এ ব্যাগগুলো যখন পোড়ানো হয় তখন ডাইঅক্সিন ও ফুরানের মতো বিষাক্ত ধোঁয়া নির্গত হয়। যা বায়ুদূষণের মধ্য দিয়ে শ্বাসযন্ত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। গত ৭ অক্টোবর চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার দরগাপাড়ায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদনের অপরাধে জামাল উদ্দীন নামে এক ব্যক্তিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ সময় ওই কারখানা থেকে ৪৮ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়। পরে ওই কারাখানাটি সিলগালা করে দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অরূপ কুমার দাস। পলিথিনের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে উল্লেখ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবু সাইদ বলেন, নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন করার অপরাধে এরই মধ্যে একটি কারখানাকে সিলগালা করা হয়েছে।

আমাদের অফিসে জনবলের সঙ্কট আছে। তাই আপাতত অভিযান কিছুটা কম। তবে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আগামী দিনগুলোয় অভিযান অব্যাহত থাকবে।