নতুন গোরস্থানে সর্বপ্রথম শায়িত হলেন জাবি’র শিক্ষার্থী রাচি

প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি

গতমাসে স্থান নির্ধারণ ও নামকরণ করা শেরপুরের নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের চরবড়ইগাছি গ্রামের পারিবারিক নতুন গোরস্থানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রথম বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী আফসানা করিম রাচিকে প্রথম মৃতব্যক্তি হিসেবে গত বুধবার রাতে সমাহিত করা হয়েছে। এটা তাদের পারিবারিক গোরস্থানের প্রথম কবর। জানা গেছে, আফসানা করিম রাচি (২০) শেরপুরের নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের চরবড়ইগাছি গ্রামের সন্তান। তিনি রোডস এন্ড হাইওয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী রেজাউল করিমের মেয়ে। বাবা-মায়ের ৩ ছেল ও ৩ মেয়ের মধ্যে রাচি ৫ম সন্তান এবং মেয়েদের মধ্যে সবার ছোট। আফসানা করিম রাচি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মার্কেটিং বিভাগের ৫৩ ব্যাচের (২০২৩-২৪ সেশন) প্রথম বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী এবং বীরপ্রতীক তারামন বিবি হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাস্তা পারাপারের সময় অটোরিকশার ধাক্কায় গুরুতর আহতের খবর পেয়ে সুদূর মালয়েশিয়া থেকে চলে আসেন রাচির মা কবিতা। কিন্তু দেশে এসে অতি আদরের ছোট মেয়ের মুখে মা ডাক শুনতে না পেরে বার বার অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন রাচির মা। নিহতের সহপাঠীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাস্তা পারাপারের সময় আফসানা করিম রাচিকে পিছন থেকে একটি অটোরিকশা সজোড়ে ধাক্কা দেয়। এতে সে ছিটকে গিয়ে রাস্তার পাশের একটি গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে বন্ধু-বান্ধবরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার ও পরে মুমূর্ষু অবস্থায় সভারের এনাম মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গত বুধবার সকালে ঢাকার ধানমন্ডিতে নিহতের প্রথম জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয় এবং দ্বিতীয় জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয় নিজ উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের চকবড়ইগাছি জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। এ সময় নিহতের পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, স্কুল-কলেজ জীবনের সহপাঠীসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আফসানা করিম রাচির বাবা দীর্ঘদিন ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে রাজধানী ঢাকার গ্রীণ রোডস্থ নিজ বাসায় বসবাস করেন। তবে অবসরে যাওয়ার পরে মাঝেমধ্যে ময়মনসিংহ শহরের একটি বাসায় থেকে ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার কোদালদর এলাকায় নিজের মাছের খামার দেখভাল করেন এমনকি গ্রামের বাড়ির জমিজামার খোঁজখবর নিতে যেতেন। আর তার মা কবিতা একাকিত্ব কটাতে সময় পেলেই প্রতিষ্ঠিত ছেলে ও মেয়েদের বাসাবাড়িতে ঘুরতে যেতেন। সময় কাটাতে ঘুরাঘুরির অংশ হিসেবে আফসানা করিম রাচির মা ঘটনার দিন মালয়েশিয়ার প্রবাসী বড় ছেলের কাছে ছিলেন। মেয়ের সড়ক দুর্ঘটনায় আঘাতের খবর পেয়েই ছুটে আসেন দেশে।