ঢাকা ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আড়াই টাকায় সিঙ্গারা বিক্রি করে স্বাবলম্বী পিযুশ

আড়াই টাকায় সিঙ্গারা বিক্রি করে স্বাবলম্বী পিযুশ

সিঙ্গারা বিক্রি থেকে অর্জিত আয়ে বেশ খুশি পিযুশ। বগুড়ার ছোট্ট এক পল্লি গ্রাম থেকে উঠে আসা পিযুশ আজ পরিচিত এক সফল উদ্যোক্তা হিসেবে। তবে তার সফলতার গল্প শুরু হয়েছিল খুবই সামান্য একটি উদ্যোগ দিয়ে-আড়াই টাকার সিঙ্গারা বিক্রি। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া পিযুশের জীবনের প্রতিটি অধ্যায় ছিল সংগ্রামের গল্পে ভরা। কিন্তু নিজের জীবনকে বদলে দেয়ার অদম্য ইচ্ছাশক্তি তাকে নিয়ে এসেছে আজকের এই অবস্থানে। পিযুশের শৈশব কেটেছে চরম আর্থিক অভাবের মধ্যে। পরিবারের অল্প কিছু জমি ছাড়া অন্য কোনো সম্পদ ছিল না। পড়াশোনার ফাঁকে পিযুশ ছোটখাটো কাজ করতেন, কিন্তু তাতে সংসারের অভাব মিটত না। একদিন তিনি ঠিক করলেন, নিজেই কিছু করবেন। স্থানীয় বাজারে প্রথমে ঝাঁল মুড়িমাখা বিক্রি শুরু করে, সামান্য লাভের কারণে দুঃখ মোচন হয় না। পরবর্তীতে তিনি সিঙ্গারা বিক্রির চিন্তা করে। আড়াই টাকা মূল্যের সিংগাড়া বিক্রি করে সংসার ও ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালায় পিযুশ চন্দ্র। প্রতিদিন বিকেল হলেও শত শত ভোজনরসিক আবাল-বৃদ্ধ-বনিতারা ভিড় জমায় সেখানে। বগুড়ার গাবতলী উপজেলার আদুর বাজারে পিযুশের দোকানে মিলছে এমন অতুলনীয় স্বাদের সিংগাড়া। পিযুশ চন্দ্র মোহন্ত জানায়, স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তার সংসার। পরিবারের সদস্যদের নিয়েই তিনি ভালোমানের ময়দার তৈরি খামিরের সাথে আলু ও বিভিন্ন ধরনের মসলা ব্যবহার করে তৈরি করে সিংগাড়া। এ কাজে তার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েও সহযোগিতা করে থাকে। ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে ভালোভাবে লেখাপড়া করাতে পারছি। প্রতিদিন গড়ে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার সিংগাড়া বিক্রি হয়। একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া পিযুশের ছেলে অমিত মোহন্ত জানায়, প্রতিদিন কলেজের ক্লাস আর পড়াশোনার পাশাপাশি বাবাকে সহযোগিতা করি। পিযুশের লক্ষ্য এখন তার ব্যবসাকে আরো বড় পরিসরে নিয়ে যাওয়া। তিনি চান, তার সিঙ্গারার দোকানটি ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক এবং দেশের অন্যান্য জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়ুক। পিযুশের গল্প শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির সাফল্যের কাহিনী নয়, এটি আমাদের শেখায় যে সংকল্প আর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে যে কোনো মানুষ জীবনে সাফল্য অর্জন করতে পারে। তার আড়াই টাকার সিঙ্গারা আজ হাজার টাকার অনুপ্রেরণার গল্প হয়ে উঠেছে। সিংগাড়া খেতে আসা সারিয়াকান্দির রাজ্জাক জানায়, ভিন্ন স্বাদের এই সিংগাড়া খেতে অনেক মজা। লাভ কম করে বেশি বিক্রি করেন তিনি। দিন দিন চাহিদা বেড়েই চলেছে। বগুড়া শহর ও বিভিন্ন এলাকা থেকে সিংগাড়া খেতে প্রতিদিনই ভিড় করে তার দোকানে। ভালো মানের মসলা, স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে সে মানুষকে ভালো খাওয়াতে চায়। পরিবার পরিজন নিয়ে ভিন্ন স্বাদের এই সিংগাড়া খেতে আসে অনেকেই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত