আলু উৎপাদনকারী জেলা মুন্সীগঞ্জে আলু আবাদের প্রস্তুতি নিয়ে চাষিরা। আলু মুন্সীগঞ্জ জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল। প্রতি বছর প্রান্তিক চাষিরা আলু চাষে লোকসানে পরে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপরও আলু আবাদ মৌসুমে তারা আবাদে সক্রিয় হয়ে উঠে। পুঁজি হারিয়ে আবারো লাভের মুখ দেখার আশায় আলু চাষ করে। জেলার প্রান্তিক কৃষকরা আর্থিক ঝুঁকি নিয়ে আলু চাষ করে আর ফায়দা লুটে মধ্যসত্বভোগীরা। আলু চাষিরা চলতি মৌসুমে আলু আবাদের জন্য জমিতে জমে থাকা কচুরি পানা, ধান গাছসহ অন্যান্য আগাছা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে আবাদে জোরে শোরে প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পুরোদমে আলু আবাদের কাজ শুরু হবে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, চলতি আলু মৌসুমে জেলায় ৩৪ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মুন্সীগঞ্জ সদরে ৯ হাজার ৬৭৪ হেক্টর, টংগীবাড়ীতে ৯ হাজার ৯৪ হেক্টর, শ্রীনগরে ১ হাজার ৯১৭ হেক্টর, সিরাজদিখানে ৮ হাজার ৮২০ হেক্টর, লৌহজং ৩ হাজার ১৩৫ হেক্টর এবং গজারিয়ায় ২ হাজার ৪ হেক্টর জমি। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ লাখ ৪৫ হাজার ১৯৫ টন। জেলায় গত মৌসুমে ৩৪ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়, ফলন হয়েছিল প্রায় ১২ লাখ টন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৩৪ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের জন্য বীজ আলুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৬৯ হাজার ৩১০ টন। জেলার হিমাগারগুলোতে বীজ আলু রয়েছে প্রায় ৬৪ হাজার ৫১৬ টন। আমদানি করা বীজ দিয়ে বাকি চাহিদা পূরণ করা হবে। খাবার আলুর বাজার মূল্য বেশি থাকায় অনেক আলু ব্যবসায়ী হিমাগারে রাখা বীজ আলু বিক্রি করে দিচ্ছে। বাজার মনিটরিং টিম সক্রিয় না থাকলে আশংকা রয়েছে বাজার সিন্ডিকেট বীজ আলুর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজার মূল্য বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে আবাদ কম হবার আশংকা থাকবে। চলতি আলু মৌসুমে কৃষকদের মধ্যে সার সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। সদর উপজেলার চিতলিয়া বাজারের আলু চাষি রিপন মাহমুদ জানান, এ সময় বৃষ্টি না হলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জমি আবাদ উপযোগী হয়ে উঠবে, তখন পুরোদমে আলু আবাদ শুরু হবে।