কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার হাট-বাজারসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার হচ্ছে নিষিদ্ধ পলিথিন। পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকলেও আইনের প্রয়োগ না থাকায় ব্যবহার বাড়ছে দিনদিন। তাড়াইল সদর বাজারের অধিকাংশ দোকানে পলিথিনের কেজি বিক্রি হয় ৩০০ টাকা আর দেশি পলিথিন ২২০-২৫০ টাকা। এই বাজার থেকেই নিষিদ্ধ পলিথিন চলে যায় ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট-বাজারে। উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের প্রতিটি বাজারে মুদি দোকান থেকে শুরু করে কাঁচাবাজার সর্বত্রই নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগের ছড়াছড়ি। ফলে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে। তাড়াইল সদর বাজার ঘুরে দেখা যায়, তরকারির বাজারে একশ গ্রাম কাঁচামরিচ ক্রয় করলেও বিক্রেতা ছোট একটি পলিথিন ব্যাগে ভরে তা ক্রেতাকে দিচ্ছে। প্রতিটি মিষ্টির দোকানেই মিষ্টি প্যাকেটজাত করার সময় ব্যাবহৃত হচ্ছে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন। সরেজমিনে দেখা যায়, তাড়াইলের বুক চিরে বয়ে যাওয়া নরসুন্দা নদীর তলদেশে পলি আটকে শুধু নদীর নাব্যই নষ্ট হচ্ছে না, বরং মাছ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে পানিতে স্বাভাবিক অক্সিজেনের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস করছে। এ ছাড়াও শাখা নদী ও খাল-বিল-জলাশয়ের তলদেশেও রয়েছে পলিথিন ব্যাগের মোটা স্তর। এতে নষ্ট হচ্ছে পানির প্রাকৃতিক গুণ। কৃষিক্ষেত্রে পলিথিন ব্যাগ সূর্যের আলো ফসলের গোড়ায় পৌঁছতে বাধা দেয়। ফলে মাটির ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়া মরছে না বলে কৃষিজমিতে উৎপাদন কমে আসছে। তাড়াইল উপজেলার সচেতন মহল মনে করেন, বিপন্ন পরিবেশ রক্ষার জন্য দ্রুত দেশ থেকে পলিথিনের মূলোৎপাটন করা উচিত। পলিথিনের স্থলে পাট, কাগজ ও চটের ব্যাগ যা সহজে মাটিতে পচনশীল তা ব্যবহারের ওপর জোর দিতে হবে।
এগুলো পচলে মাটির ঊর্বরতা বৃদ্ধি পায়। পলিথিন ব্যাগ মাটিতে পচে না বলে তা মাটির ঊর্বরতা নষ্ট করে। মাটিকে উত্তপ্ত করা ও গাছের মূল মাটির গভীরে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করে পলিথিন। পুকুরের তলদেশে জমে থাকা পলিথিন মাছ ও জলজ প্রাণীর অস্তিত্ব বিপন্ন করে। নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার রোধে তাড়াইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য পলিথিন আরামদায়ক বলে ব্যবহারকারী-বিক্রেতা কেউই পরিবেশের কথা ভাবছে না। এর ফলে চুটিয়ে চলছে এর নিষিদ্ধ ব্যবসা ও ব্যবহার। এ অবস্থা কিছুতেই চলতে দেয়া যায় না। নিষিদ্ধ পলিথিন যাতে নিষিদ্ধই থাকে এ লক্ষ্যে এখনই পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।