সেতু বিধ্বস্ত, দুই বছর ধরে নদী পারাপারে ভোগান্তি
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার সরকারি লেবুখালী হাবিবুল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ভাড়ানী খালের উপর নির্মিত আয়রন সেতুটি প্রায় দুই বছর আগে ভেঙে গেলেও মেরামত না করায় ভোগান্তিতে পড়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী। সেতু মেরামত না হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট খেয়া নৌকায় পারাপার হতে হচ্ছে স্থানীয় হাবিবুল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীকে। মাঝে মাঝে পারাপারের খেয়া না থাকায় প্রায় দুই কিলোমিটারের অধিক অতিরিক্ত পথ ঘুরে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসতে হচ্ছে। ফলে ভোগান্তির কারণে বিদ্যালয়ের কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থী। স্থানীয়রা জানান, লেবুখালীর পায়রা নদী থেকে পটুয়াখালীর লাউকাঠি নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ভাড়ানী খালের উপর লেবুখালী হাবিবুল্লাহ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে ২০০৯ সালের দিকে তৈরি করা হয় আয়রন সেতু। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও স্থানীয় লোকজন এই সেতু দিয়ে পারাপার হতো।
২০১৫ সালে পণ্যবাহী কার্গোর ধাক্কায় সেতুটি একাংশ বিধ্বস্ত হলে কয়েকদিন শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা দুর্ভোগে পড়ে ভারানি খালটি পারাপার হতে হয় খেয়া নৌকায়। কয়েক মাসের মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি সেতুটি মেরামত করলেও পুনরায় ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে বালুভর্তি একটি কার্গোর ধাক্কায় সেতুর অর্ধেকটা দুমড়ে মুছড়ে খালে পড়ে যায়। তখন থেকেই দুই পারের লোকজনের যাতায়াতে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ দুই বছরেও সেতুটি মেরামত না হওয়ায় বিদ্যালয়ের সহস্রাধীক শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে খেয়া নৌকায় পারাপার হতে হয়। সরকারি হাবিবুল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. সাফিন বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পারাপার হতে হয়। মাঝে মাঝে খেয়া না থাকায় দুই কিলোমিটার পথ ঘুরে আসতে হয়। এটা খুবই কষ্টকর।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারহানা জাবিন বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তাই দ্রুত একটি নতুন সেতু নির্মাণ করা দরকার। লেবুখালী সরকারি হাবিবুল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান আশরাফ বলেন, ১৯৬১ সালে স্থাপিত হাবিবুল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ২০১৮ সনে জাতীয়করণ করা হয়।
বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রায় এক হাজারের অধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। তিনি বলেন, সেতুটি বিধ্বস্ত হওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে খেয়া পারাপার হয়ে আসতে হয় অথবা দুই কিলোমিটার ঘুরে পাগলা এলাকায় নির্মিত সেতু পারাপার হয়ে আসতে হয়। এতে শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি হয়। সেতুটি বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কমে গেছে বলেও জানান তিনি। তাই দ্রুত সেতুটি মেরামত কিংবা নতুনভাবে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন মাহমুদ বলেন, সেতুটি নির্মাণের জন্য একটি বড় প্রকল্প দরকার, এ ব্যাপারে এরই মধ্যে এলজিইডি অফিসকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অবহিত করা হয়েছে ।
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মীর আলী হোসেন জানান, বিধ্বস্ত হওয়া সেতুটি সরিয়ে সেখানে একটি নতুন সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সেতুটির ডিজাইনের কাজ চলমান। দ্রুত টেন্ডার আহ্বান করা হবে।