নব গঠিত কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করায় দলটির ১৫ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করা হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার স্বাক্ষরিত পাঠানো নোটিশ প্রাপ্তির তিনদিনের মধ্যে তাদের এই নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। শোকজের জবাব না দিলে একতরফাভাবে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিএনপির সাবেক ও আহ্বায়ক কমিটিতে থাকা এরকম ১৫ নেতাকে এ শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। শোকজ চিঠিতে বলা হয়, গত ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন ও ঘোষণা দিয়েছেন। অনুমোদিত কমিটি এবং নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে আপনি অগঠনতান্ত্রিক, বেআইনি, উচ্ছৃঙ্খল ও হাটকারিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন তথাকথিত কর্মসূচিতে’ বারবার অংশ নিয়ে অসত্য, বিদ্বেষপূর্ণ, অশারীন ও হুমকিমূলক বক্তব্য প্রদান করেছেন। বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারকে সদস্য সচিব করে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয় হয়। এরপর ৪ নভেম্বর ৩১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। নেতাকর্মীদের অভিযোগ কমিটিতে যাদের রাখা হয়েছে, তাদের অনেকেই বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতন অত্যাচারের সময় মাঠে ছিলেন না। এরপর কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে দিতে কয়েক দফায় বিক্ষোভ, মানববন্ধন কর্মসূচি ও সমাবেশ করেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভ সমাবেশে আহ্বায়ক কমিটিতে থাকা কয়েকজন ত্যাগী নেতারাও অংশ নেন। গত ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে কমিটি ভেঙে দিতে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন তারা। সর্বশেষ ১৭ নভেম্বর আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে দিতে আবারো মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন পদবঞ্চিতরা। আন্দোলন থেমে থাকবে না জানিয়ে শোকজ নোটিশ পাওয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন চৌধুরী মিলন বলেন, কমিটিতে দুর্দিনে দলের হাল ধরা অনেক নেতাকর্মীদের জায়গা হয়নি। অযোগ্যদের বাদ দিয়ে দলের পাশে থেকে দলের জন্য যারা ত্যাগ শিকার করেছেন তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে আন্দোলন করেছি। ওই শোকজ চিঠির কোন প্রশাসনিক গ্রহণযোগ্যতা নেই। শোকজ চিঠির ধরণ দেখে মনে হচ্ছে সদস্য সচিব ব্যক্তিগত চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে যে ধারা উল্লেখ করা হয়েছে সেই ধারা মোতাবেক সদস্য সচিব শোকজ চিঠি পাঠাতে পারেন না। কেউ অনিয়ম বা সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ড করলে সদস্য সচিব কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠাতে পারেন। তারপর সিদ্ধান্ত কেন্দ্র নেবে। কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশ আহ্বায়ক কমিটির এখতিয়ার ভুক্ত। যারা দলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে তাদেরকে শোকজ করা হয়েছে এবং জবাব দিতে বলা হয়েছে। এমন সম্ভাব্য ১৫ জন হতে পারে। এটা কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা না। তবে যারা নোটিশের জবাব দিবেন না তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।