সাতক্ষীরার শ্যামনগরে গড়ে ওঠা অর্ধ শত স’মিলের অধিকাংশই লাইসেন্সবিহীন। সরকারি অনুমোদন ছাড়াই উপজেলার যেখানে-সেখানে গড়ে উঠেছে এসব সমিল। এসব স’মিল মিলে প্রতিদিন সাবাড় করা হচ্ছে বনজ ও ফলদসহ নানা প্রজাতির গাছ। সরেজমিনে দেখা যায় শ্যামনগরে ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় অর্ধ শত স’মিল রয়েছে। লাইসেন্স ছাড়াই যুগের পর যুগ এসব স’মিল মালিকরা ব্যবসা করে আসছে।
স’মিল চালানো ক্ষেত্রে সরকারের নিয়ম নীতি থাকলেও শ্যামনগর উপজেলা জুড়ে এ চিত্র ভিন্ন। বেশ কয়েক বার অভিযান চালিয়ে সর্তক করা হলে ও চোখের সামনে প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করেই চলছে এসব স’মিল। অধিকংশ স’মিল রাস্তার পাশে হওয়ায় সড়কের ধার জুড়ে ফেলে রাখা হয়েছে শ শ গাছের গুড়ি। বন পরিবেশ অদিদফতরের তদারকির অভাবে রাস্তার পাশ, আবাসিক স্থান ও বাণিজ্যিক এলাকায় বসানো হয়েছে এসব স’মিল। জানা যায়, শ্যামনগর পৌর এলাকার বাসষ্টান্ড, খানপুর, ছাড়াও উপজেলার কাশিমাড়ী, নওয়াবেকী, জয়নগর, মুন্সিগঞ্জ, বংশীপুর, চন্ডীপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার সংলগ্ন ও লোকালযে এসব অবৈধ স’মিল রয়েছে। এসব স’মিলের কোনো বৈধ কাগজ পত্র নেই। বেশ কিছু স’মিল একেবারেই স্পর্শকাতর জায়গায় অবস্থিত।
যদিও স’মিল স্থাপন বিধিতে বলা হয়েছে সরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান ও জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থানের ২০০ মিটার সরকারি বনভূমি সীমানার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে স্থাপন করা যাবে না এ ছাড়া সুন্দরবন থেকে ১০ কিলোমিটারের ভিতরে স’মিল স্থাপন। এ ছাড়া সকাল ৬টার আগে এবং সন্ধ্যা ৬টার পরে সমিল চালানো যাবে না।
সেই সাথে স’মিল চালানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যথাযথ প্রক্রিয়ার নির্ধারিত ফি প্রদান সাপেক্ষে লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু শ্যামনগর স’মিল মালিকরা এসব আইন কানন মানেন না। নওয়াবেকী বাজারে অবস্থিত লাইসেন্সবীহিন স’মিলের মালিক বলেন, আমরা এখানো লাইসেন্স পাইনি। তবে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছি। লইসেন্স না থাকার ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স’মিল মালিক জানান, তারা তারা লাইসেন্স ছাড়াই চলতে পারছেন। তাই লাইসেন্স করার দরকার পড়ে না। প্রতি মাসে ঘাটে ঘাটে টাকা দিয়ে বছরের পর বছর করাত কল চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্যামনগরউপজেলার স’মিল মালিক বলেন, উপজেলাতে অর্ধশত স’মিল রয়েছে এর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া কোনো স’মিলের লাইসেন্স নেই।
এক স’মিল মালিক জানান মালিকদের অনেকবার কাগজপত্র করতে বলা হলেও উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তার সাথে বিশেষ যোগাযোগ করে তারা মিল চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে উপজেলার বন কর্মকর্তা বলেন, শ্যামনগরে কিছু কিছু স’মিলের লাইসেন্স বেশিরভাগ স’মিলের লাইসেন্স নেই। কিছু দিন আগেও আমরা অবৈধ কয়েকটি স’মিলের বিরুদ্ধে অভিযান করেছিলাম। কিন্তু তাদের সঙ্গে পেরে উঠছি না।
শৈলকুপায় উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা রনী খাতুন বলেন, অভিযানের ভিত্তিতে বেশ কিছু মিলে নোটিস করা হয়েছে এবং আরো নোটিস পাঠানো হবে। নোটিসের মেয়াদ পার হলে অবৈধ স’মিলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।