ভোলার চরফ্যাশনে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চর মুজিব নগর ইউনিয়নে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে কৃষকদের পাকা ধান লুট করে নেয়ার সময় দেশীয় অস্ত্রসহ ছয় যুবককে আটক করেন গ্রামবাসী। গত সোমবার রাতে মুজিবনগর ইউনিয়নের চাঁন মিয়ার বাজার এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। পরে দুলারহাট থানা পুলিশের নির্দেশনায় গ্রাম পুলিশদের জিম্মায় রাতভর ইউনিয়ন পরিষদে আটক রাখার পর গতকাল বুধবার দুপুরে আটককৃতদের উদ্ধার করে থানায় আনেন পুলিশ। আটককৃত যুবকরা হলেন, মুজিবনগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. জাকির হোসেনের ছেলে মো. কাউসার, মো. আবদুল জলিলের ছেলে মো. নয়ন মিয়া, মো. খোকন মিয়ার ছেলে রায়হান, মো. কালু কাজীর ছেলে রাসেল ও নজরুল নগর ইউনিয়নের বারেক হাওলাদারের ছেলে ফিরোজ, মো. লেকমান হাওলাদারের ছেলে মো. ফরহাদ হাওলাদার।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ওই ৬ যুবকসহ দুর্বৃত্তরা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চর মুজিব নগর ইউনিয়নের সাধারণ মানুষকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি ও লুটপাট করে আসছিলেন। চলতি আমনের মৌসুমে তারা নতুনভাবে সক্রিয় হয়ে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অসহায় কৃককদের পাকা ধান লুটপাট শুরু করেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তারা দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে ওই ইউনিয়নের অসহায় কৃককদের পাকা ধান লুটের চেষ্টা করেন। এসময় স্থানীয়রা ও কৃষকরা দাওয়া করে ৬টি বগি দাসহ তাদের আটক করে দুলারহাট থানা পুলিশকে খবর দেন। দুলারহাট থানার ওসির নির্দেশে গ্রামবাসীর হাতে আটক ছয় যুবককে গ্রাম পুলিশদের জিম্মায় রাতভর ইউনিয়ন পরিষদের ভবনে আটক করে রাখেন। পরে গতকাল বুধবার দুপুরে দুলারহাট থানা পুলিশের একটি দল তাদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। স্থানীয় কৃষক মো. মফিজল হক জানান, তারা অন্যের জমি লগ্নী করে চাষবাদ করে থাকেন। তাদের আবাদ করা ধান কেটে মাড়াই করার সময় যুবকরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না চাইলে জোর করে তাদের ধান লটু করে নিয়ে যান। বিয়ষটি থানা পুশিকে জানাবেন বললে তাকে হত্যার হুমকি দেন তারা। তাই ভয়ে আতঙ্কে তিনিসহ অপর কৃষকরা চুপ থাকেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কৃষকরা জানান, চলতি মৌসুমে একদল যুবক দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে গ্রামের কৃষকদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করে কৃষকদের কাটা ধান মাড়াই করার সময় বিভিন্ন অংকের টাকা দাবী করেন। কৃষকরা তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করলে দলবল নিয়ে ওই কৃষকের বাড়িতে হানা দিয়ে তাদের ধান লুট করে নিয়ে যান।
তাদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পান না। তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে মুজিবনগর ইউনিয়নের কয়েকশ’ অসহায় কৃষক। অভিযুক্ত আটককৃত ৬ যুবক পুলিশ হেফাজতে থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি। দুলারহাট থানার ওসি আরিফ ইফতেখার মোবাইল ফোনে জানান, অভিযুক্তদের উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।