জলাবদ্ধ জমিতে পানি ফল চাষে আগ্রহ কৃষকের
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
বখতিয়ার রহমান, পীরগঞ্জ (রংপুর)
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকার জলাবদ্ধ জমি গুলিতে পানি ফল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে কৃষকেরা। বিকল্প এ ফল চাষে আর্থিক সচ্ছলতায় ফিরে এসেছে এ সব কৃষক। পীরগঞ্জ উপজেলার পাঁচগাছি, শানেরহাট, কাবিলপুর, চতরাসহ ক’টি ইউনিয়ন ও পীরগঞ্জ পৌর সভার আওতাধীন অনেক কৃষক এখন পানি ফল চাষ করে সংসারের আর্থিক সংকট নিরসনে অনেকটাই সক্ষম হয়েছেন। উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের শয়েবপুর গ্রামের কৃষক পরিমল চন্দ্র এর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনি তার বিল এলাকার জলাবদ্ধ ৩৩ শতক জমিতে পানি ফলের বীজ বপন করে ২০ হাজার টাকার পানি ফল বিক্রি করেছেন। সেখানে যত দিন পানির অস্তিত্ব থাকবে তত দিন এ ফল বিক্রি করতে পারবেন। তবে পানি যতদিন থাকবে ততদিন ফলও পাওয়া যাবে বলে তিনি ধারণা করছেন। একই এলাকার বামনীর বিলে ৭০ শতক জমিতে পানি ফলের চাষ করে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন জাহাঙ্গীরাবাদ গ্রামের মিজানুর রহমান। মিজানুর রহমান জানান, জমি গুলো পানিতে নিমজ্জিত থাকায়, পানি ফল চাষ করে ভাল ফল পাচ্ছেন। প্রতি মন পানি ফল ২ হাজার টাকা মুল্যে বিক্রি করছেন। পানেয়া গ্রামের তারা মিয়া বলেন, আমাদের গ্রামের বিল এলাকার প্রায় ৩০ জন কৃষক পানি ফল চাষ করছেন এবং সে গুলো বাণিজ্যিক ভাবে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রিও করা হচ্ছে। সে সঙ্গে উৎপাদনের পরিমাণও বাড়ছে। পানি ফল চাষিদের অভিমত, বিল এলাকার কিছু জমিতে শুস্ক মরশুমে বোরো ধান চাষ সম্ভব হলেও অতিরিক্ত পানি জমার কারনে পরবর্তিতে আমন উৎপাদন সম্ভব হয় না। তাই শুস্ক মরশুমের বোরো ধানের সঙ্গে পানি ফলের বীজ রোপন করা হয়। বোরো ধান কর্তনের পর পানি ফলের বীজ থেকে চারা গুলো বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং পানি বৃদ্ধির সঙ্গে চারা গুলোও বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে সে গুলো থেকে ফল সংগ্রহ করা হয়। এই ফল উৎপাদনে কোনো সারও প্রয়োগ করতে হয় না। কম খরচে এ ফল উৎপাদন বেশ লাভ জনক হওয়ায় অনেকেরই আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার জানান, অনাবাদি জমিতে পানি ফলের চাষ করা যায়। এতে খরচ কম সময়মতো ফলের গাছে বালাইনাশক বা কীটনাশক প্রয়োগ করলেই ফলন ভালো পাওয়া যায়। তাই চাষিদের মধ্যে পানি ফল চাষের আগ্রহ বাড়ছে।